সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের, উপনেতা আনিসুল ইসলাম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধীদল কারা হবে সেই নিয়ে নির্বাচনের পর থেকেই চলছিল নানা আলোচনা। এর মধ্যেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা এবং কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। রোববার (২৮ জানুয়ারি) সংসদ সচিবালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ খবর জানানো হয়।
এই ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার নির্বাচনের পর দলগতভাবে ১১ আসন নিয়ে দ্বাদশ সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে বিরোধী দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও দলটির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে স্পিকার যথাক্রমে বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার স্বীকৃতি দিলেন।
এমন একদিন নতুন সংসদে বিরোধীদল কারা হচ্ছে তা জানা গেল যেদিন জাতীয় পার্টির দলীয় রাজনীতি নিয়ে নতুন করে নাটকীয়তা তৈরি হয়েছে। রোববার দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও একাদশ সংসদের বর্তমান বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তিনি দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন।
তবে এরপরই এদিন বিকালেই সংসদে বিরোধীদলের নেতা ও উপনেতার বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপন এল। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, "সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত ক্ষেত্রমত দল বা অধিসঙ্ঘের নেতা রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে (জিএম কাদের) সংসদে কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী বিরোধী দলীয় নেতা ও চট্টগ্রাম-৫ আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে স্পিকার স্বীকৃতি দিয়েছেন।"
জাতীয় পার্টিও এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি সংসদীয় দলের বৈঠকে এই দুইজনকে বিরোধী দলের নেতা ও উপনেতা নির্বাচন করে। পরে এ সংক্রান্ত দলীয় সিদ্ধান্ত স্পিকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচিত দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের সংসদীয় দলের মনোনয়নের চিঠি পাওয়ার পর স্পিকার তাতে সম্মতি দিলে বিরোধীদল এবং বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার বিষয়টি কার্যকর হয়।
সবশেষ একাদশ সংসদে জাপার তৎকালীন চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা ও জি এম কাদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপি নির্বাচন পর বর্জনের ৭ জানুয়ারির ভোটে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। দলগতভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১টি আসন পায় জাতীয় পার্টি। এছাড়া জাসদ ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১ টি, এক সময়ে বিএনপি জোটে থাকা কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসন পায়। আর ৬২টি আসনে জয়ী হয়ে স্বতন্ত্ররা জোট গঠন করলে সংসদে বিরোধীদলের আসনে কারা বসবে সেই প্রশ্নের মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার হলো।