২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৪০

পাঁচ বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে ৫৫ শতাংশ

পাঁচ বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে ৫৫ শতাংশ  © সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা যেন দিনদিন বেড়েই চলেছে। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার বেড়েছে ১৬ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় মৃত্যু হার বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। 

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে ‘২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৩ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৫৩২টি, নিহত হয়েছেন দুই হাজার ৪৮৭ জন এবং আহত হয়েছেন এক হাজার ৯৪৩ জন। নিহতদের মধ্যে এক হাজার ৯০৯ জন (৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ) ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার বিশ্লেষণ- অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে (৫৭২টি) ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে (৯০৪টি) ৩৫ দশমিক ৭০ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ভারি যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে (এক হাজার ২৫টি) ৪০ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে (৩১টি) এক দশমিক ২২ শতাংশ। ৩৬ দশমিক ২১ শতাংশ (৯১৭টি) দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালক এককভাবে দায়ী ছিল।

২০১৯ সালে এক হাজার ১৮৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ৯৪৫ জন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল এক হাজার ৩৮১ দুর্ঘটনায় এক হাজার ৪৬৩ জন। ২০২১ সালে দুই হাজার ৭৮টি দুর্ঘটনায় দুই হাজার ২১৪ জন। ২০২২ সালে দুই হাজার ৯৭৩টি দুর্ঘটনায় তিন হাজার ৯১ জন। যদিও ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ও মৃত্যু কমেছে।

তবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়লেও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। ২০২২ সালে ছয় হাজার ৮২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৭১৩ জন।

আরও পড়ুন: দেশে এক বছরে ৫১৩ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, হতাশায় বেশি

২০২৩ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ছয় হাজার ৯১১টি। নিহত হয়েছেন ছয় হাজার ৫২৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৪০৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৯৭৪ জন (১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ), শিশু এক হাজার ১২৮ জন (১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ)। দুই হাজার ৫৩২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত দুই হাজার ৪৮৭ জন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ১২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ৪৫২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯৪২ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই সময়ে ১০৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন নিহত, ৭২ জন আহত এবং ৪৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ট্রলার ডুবে ৩৩টি গরুর মৃত্যু ঘটেছে। ২৮৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩১৮ জন নিহত এবং ২৯৬ জন আহত হয়েছেন।