২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪৪

জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু ১ ফেব্রুয়ারি

কবিতা পরিষদের উৎসব দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি ফটো

আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসব। জাতীয় কবিতা পরিষদের এ আয়োজনে এবারের স্লোগান—‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’। উৎসবে বিশ্বের অনেক দেশের কবিরা অংশ নিবেন বলে জানা গেছে। 

আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) কবিতা পরিষদের উৎসব দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এই উৎসবে জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কারপ্রাপ্ত কবির নাম ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত বলেন, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে কবিতা উৎসবের শুরু ১৯৮৭ সালে। কালের পরিক্রমায় সে উৎসব সাড়ে তিন দশক অতিক্রম করেছে। এই উৎসব থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের কবিরা যে মর্মবাণী উচ্চারণ করেছেন তাই সমগ্র জাতির কণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসবের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেয়া জাতীয় কবিতা উৎসব ও জাতীয় কবিতা পরিষদের নিরন্তর এই সংগ্রামের ইতিহাস আজ আর কারও অজানা নয়। আমরা অব্যাহতভাবে স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কথা বলে এসেছি। কবিদের দ্রোহের স্ফুলিঙ্গ থেকে জন্ম নিয়ে একটি উৎসব জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক উৎসবে রূপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর নানা সংকটকালে আমাদের কবিদের অবস্থান ছিল প্রগতির পক্ষে। স্বৈরাচার ও মৌলবাদবিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বাংলাদেশের কবি-লেখক- শিল্পী-প্রকাশক এবং মুক্তবুদ্ধির মানুষেরা সোচ্চার ছিলেন। আজ যখন পৃথিবীর দেশে দেশে অশুভ শক্তির দাপটে নিরপরাধ মানুষ বিপন্ন। নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের লাশের স্তূপের ওপর ক্ষমতার অহমিকা দেখাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তখন আমরা বাংলাদেশের কবিরা এবং আরো বেশ কয়েকটি দেশের কবি ও কবিতাপ্রেমীরা একত্রিত হয়ে এই উৎসবে যুদ্ধ ও গণহত্যাসহ সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। বিগত প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ভাষার সংগ্রামী কবিরা এই উৎসবে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন। এই উৎসবকে আমরা কবিতার মিলনমেলায় পরিণত করতে পেরেছি। 

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, সামরিক সরকারের পতনের সবচেয়ে বেশি অবদান জাতীয় কবিতা পরিষদের। সমস্ত আন্দোলন তখন স্মৃত হয়ে গিয়েছিল। সকল রাজনৈতিক প্রগতিশীল দলের নেতৃবৃন্দ এই কবিতা পরিষদে এসেছেন এবং আন্দোলনের অনুপ্রেরণা নিয়ে নতুন করে আবার আন্দোলন শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে এরশাদের পতন হয়েছে, সামরিক স্বৈরচার সরকারের পতন হয়েছে। গণতন্ত্রের যাত্রা তখন থেকে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সারা পৃথিবীতে আমরা শান্তির পক্ষে। যুদ্ধ গণহত্যা আমরা পছন্দ করি না। প্রাচীনকাল থেকে কোন কবি সাহিত্যিক যুদ্ধ গণহত্যা পছন্দ করেনি। পৃথিবীর একটি বিধ্বস্ত অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এত প্রতিবাদ করার পরও গাঁজাসহ সারা বিশ্বের নানা জায়গায় শিশুসহ অনেক মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এইসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাই। আমাদের এই বার্তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।