এত শীতের কারণ কী, কতদিন থাকবে শীতের তীব্রতা?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪১ AM , আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৮ AM

সারাদেশে তীব্র শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের। রাত থেকে সকাল অবধি ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত থাকছে পথঘাট। রোদ উঠলেও অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। এদিকে মীতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। খড়কুটো জ্বালিয়ে তারা শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। জীবিকার তাগিদে অনেকে আবার শীত উপেক্ষা করেই কাজে যাচ্ছেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে এই জেলায় সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন পুরো জানুয়ারিজুড়েই শীতের প্রকোপ থাকবে।
প্রত্যেক বছরই নিয়ম করে শীত পড়ে। কিন্তু শীতের দাপট চলতি বছর একটু বেশিই মনে হচ্ছে। পৌষের শেষদিকে উত্তরের জনপদে বয়ে গেছে শৈত্যপ্রবাহ। শীতকালে সূর্যরশ্মি তীর্যকভাবে পড়ে। আবার সূর্যরশ্মি সব জায়গায় সমানভাবে পড়ে না। তার ফলে বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রার তারতম্য ঘটে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকবে। মাঝে কিছুদিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পৌষের শেষ সময়ে এসে আবারও দাপট দেখাচ্ছে শীত। সেই সঙ্গে আগামী দুই-তিন দিন শীতের তীব্রতা থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, আগামী ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরও কমে শীতের অনুভূতি বেশি হতে পারে। এরপর আবহাওয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।
এত শীতের কারণ কী?
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, “সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আসে, সেখানে শীতের অনুভূতি বাড়তে থাকে। কিন্তু পার্থক্য যদি পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে তবে শীতের অনুভূতি প্রকট থেকে প্রকটতর হয়। অর্থাৎ হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হয়।”
শুক্রবার বিভিন্ন জেলার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার তুলনা করে দেখা গেছে রংপুর, দিনাজপুর, তেতুলিয়ার মতো উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ অঞ্চলেই তাপমাত্রার পার্থক্য পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম। এছাড়া ঢাকা, বগুড়া, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলেও তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম।
নিয়ম অনুযায়ী, তাপমাত্রা আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। আর তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। পঞ্চগড়, কিশোরগঞ্জ, ঈশ্বরদী ও চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রাই কেবল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আছে। তবে শীতের তীব্রতা সারাদেশেই অনুভূত হচ্ছে।
শীত কতদিন থাকবে?
পুরো জানুয়ারি মাসজুড়েই শীতের অনুভূতি থাকবে বলে জানান আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। তবে ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারির দিকে দেশজুড়ে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত থেমে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে ২০ তারিখের পরে মৃদু বা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ আবার শুরু হতে পারে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
এদিকে জেলায় বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা ভিড় করছেন।