‘বাচ্চাসহ বউ পুড়ে গেছে আমি বের হয়ে আর কী করব’
নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে বাড়ছে বাস-ট্রেনে নাশকতার ঘটনা। রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনায় ট্রেনের জানালা দিয়ে মাথা বের করে হাত দিয়ে বাঁচার আকুতি করছিলেন এক ব্যক্তি। তখনও পুরো বগিতে আগুন ছড়ায়নি। তবে অন্য পাশে দাউদাউ করে জ্বলছে। ওই লোক বলছিলেন, আমার বাচ্চাসহ বউ পুড়ে গেছে ভেতরে আমি বের হয়ে আর কী করব। এমনি একটি ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি বাঁচার জন্য হাত বাড়িয়েছিলেন সাহায্যের জন্য। কিন্তু বের হতে পারেননি। তার অর্ধেক শরীর ট্রেনের জানালার বাইরের, অর্ধেকটা ভেতরে। পাশেই আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলছে। তার ডাকে সাড়া দিয়ে এক যুবক ওঠে তাকে বের করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু কিছুতেই তাকে বের করা যাচ্ছে না। সবই ব্যর্থ। জ্বলন্ত ট্রেনের আগুন গ্রাস করে তাঁকে।
শেষমেষ সেই যুবক জানালার পাশের আগুনের আঁচে আর সহ্য করত পারছিলেন না। দ্রুত নেমে যান। এরপরই ফায়ারের কর্মীরা সেই আটকে পড়া ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে জানালা দিয়ে পানি ছিটাতে থাকেন। কিন্তু সেই ব্যক্তিকে আর বাঁচানো গেল না। চোখের সামনেই ছটফট করতে করতে মারা গেলেন তিনি। শত শত মানুষের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছেন।
এমন দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে দেখে চোখের পানি ফেলেন অনেকে। অনেকে বলেছেন, এ কেমন নৃশংসতা! এমন নির্মমভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারে কেউ? এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত লোকজন হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে লাগা আগুনের সময় ঘটেছে। ট্রেনের ওই যাত্রী মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। তবে তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। সার্ভিস কর্মীরা পৌঁছাতে না পারায় আগুন বেশি ছড়িয়েছে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত গিয়ে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এ ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।