২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৫

প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন শাহজাহান ওমরের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী  

সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আলোচিত প্রার্থী ব্যরিস্টার মুহম্মদ শাহজাহান ওমরের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এম মনিরুজ্জামান তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় এ আসনটিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে শাহজাহান ওমরের নির্বাচিত হওয়ার পথ আরও সুগম হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় ভোটারদের।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষনা দেন মনিরুজ্জামান। এ সময় তার সঙ্গে রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট খায়রুল আলম সরফরাজসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে কোনো চাপে নয়, স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোর কথা জানান স্বতন্ত্র এই প্রার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে মনিরুজ্জামান বলেন, আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আমার মার্কা ঈগল। আজ আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে সজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সম্মানিত ভোটারদের অনুরোধ জানাচ্ছি সবাই আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে অবশ্যই কেন্দ্রে যাবেন এবং শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আগামী দিনে শেখ হাসিনাকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করবেন।

তিনি আরো বলেন, আমার মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে উল্লাস ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন এতে আপনাদের কাছে চিরঋণী।

আমি সব সময় ভেবেছি রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই আমার পরিবার। তাই আমি মৃত্যুকে উপেক্ষা করে আমার সন্তান, স্ত্রী ও মাকে ঢাকায় রেখে মহামারি করোনার সময়ও আপনাদের দ্বারে গিয়ে সাধ্যমতো পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।

নিজের শরীরে আওয়ামী লীগের রক্ত প্রবাহিত দাবি করে তিনি বলেন, এই রক্ত কখনো বেঈমানি শেখায়নি, এই রক্ত শিখিয়েছে এই জনপদের ত্যাগী, নির্যাতিত আওয়ামী লীগ পরিবারের অধিকার আদায়ে কথা বলার। রাজনীতি আমার নেশা ও পেশা। এই রাজনীতি করেই আমার পথ চলতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে লালন করেই আগামী দিনের পথ চলা। কখনো নেত্রীর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নৌকার বিপক্ষে কখনোই ছিলাম না। ভবিষ্যতেও থাকব না।’

নৌকার আলোচিত প্রার্থী শাহজাহান ওমরকে সমর্থন দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, কাউকে সমর্থন করে না। নিজের ব্যক্তিগত কারণে।’

সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির ও রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খায়রুল আলম সরফরাজসহ কর্মী সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর এক সভায় শাহজাহান ওমরের পক্ষে নির্বাচনে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ আসনে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রার্থী ঈগল প্রতীকের মনিরুজ্জামানকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রেজুলেশন করা হয়। এই খবর গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার একদিন পর ২০ ডিসেম্বর রাতে রাজাপুর কাঠালিয়া দুই উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে শাহজাহান ওমরের দ্বন্দ্ব মেটাতে বরিশালে সমঝোতা বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।

ওই বৈঠকের পর দলীয় নেতারা শাহজাহান ওমরের পক্ষে ভোট চাইতে নামেন। বৈঠকের ৫ দিন পর ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন আওয়ামী লীগ নেতা এম মনিরুজ্জামান।