এবার নির্বাচনে বেড়েছে নারী প্রার্থী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫৩ AM , আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩২ AM
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে ৩০০ আসনে শেষ পর্যন্ত প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৯৬ জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্রের সংখ্যা চারশ’র কাছাকাছি। নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই ভোটের মাঠে নেমেছেন সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী। সবশেষ গত নির্বাচনের তুলনায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৩৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিকদল অংশগ্রহণ করেনি এ নির্বাচনে। শুধু আওয়ামী লীগ এবং তাদের সমর্থিত দলগুলো অংশ নিয়েছে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনিসহ অনেকেই কয়েকটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের লড়াইয়ে ৩০০ আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৮৯৬ প্রার্থীর মধ্যে নারী রয়েছেন ৯৪ জন। এর মধ্যে ২৬ জন লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। আর নির্বাচনে আসা ২৭টি রাজনৈতিক দলের ১৪টি মনোনয়ন দিয়েছে ৬৮ নারীকে। অর্থাৎ মোট পুরুষ প্রার্থীর তুলনায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন ৫ শতাংশ নারী। সেইসঙ্গে ভোটের মাঠে আছেন ট্রান্সজেন্ডার দুই প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: (রংপুর-৬), উম্মে কুলসুম স্মৃতি (গাইবান্ধা-৩), সাহাদারা মান্নান (বগুড়া-১), জান্নাত আরা হেনরী (সিরাজগঞ্জ-২), হাবিবুন নাহার (বাগেরহাট-৩), সুলতানা নাদিরা (বরগুনা-২), মতিয়া চৌধুরী (শেরপুর-২), নিলুফার আঞ্জুম (ময়মনসিংহ-৩), সৈয়দা জাকিয়া নূর (কিশোরগঞ্জ-১), মমতাজ বেগম (মানিকগঞ্জ-২), সাগুফতা ইয়াসমিন (মুন্সীগঞ্জ- ২), সানজিদা খানম (ঢাকা-৪), রুমানা আলী (গাজীপুর-৩), সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর -৪), মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর-৫), শেখ হাসিনা (গোপালগঞ্জ-৩), সেলিমা আহমাদ (কুমিল্লা-২), দীপু মনি (চাঁদপুর-৩), খাদিজাতুল আনোয়ার (চট্টগ্রাম-২) ও শাহীন আক্তার (কক্সবাজার-৪)।
জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: সালমা ইসলাম (ঢাকা-১), মিথিলা রোয়াজা (খাগড়াছড়ি), হোসেন আরা (কক্সবাজার-১), জোনাকি হুমায়ূন (কুমিল্লা-১০), শেরীফা কাদের (ঢাকা-১৮), রহিমা আক্তার আসমা সুলতানা (নেত্রকোণো-২), নাসরিন জাহান রত্না (বরিশাল-৬), মনিকা আলম (ঝিনাইদহ-১) ও নুরুন নাহার (ঠাকুরগাঁও-২)।
বাংলাদেশ কংগ্রেস থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: রিম্পা আক্তার (ঠাকুরগাঁও-২), শ্যামলী রায় (রংপুর-১), শান্তি রিবারু (নাটোর-৪), মনিরা সুলতানা (খুলনা-৪), রূপা রায় চৌধুরী (টাঙ্গাইল-৭), নূর জাহান বেগম রিতা (মুন্সীগঞ্জ-১), রেহানা আক্তার রীনা (গাজীপুর-২), মমতাজ মহল (নরসিংদী-৫) এবং নাজমুন নাহার (ফরিদপুর-৪)।
এনপিপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: পারুল সরকার লিনা (দিনাজপুর-৩), আজিজা সুলতানা (দিনাজপুর-৪), মর্জিনা খান (গাইবান্ধা-১), আলেয়া (কিশোরগঞ্জ-২), দোয়েল আক্তার (মুন্সীগঞ্জ-১), নাজমা বেগম (ঢাকা-১৫), রেবেকা সুলতানা (ঢাকা-২০), নুরুন্নেসা (রাজশাহী-১) ও জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না (রাজশাহী-৪)।
তৃণমূল বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: মরিয়ম সুলতানা (বাগেরহাট-২), লুৎফুন্নাহার রিক্তা (বাগেরহাট-৪), সুমি (সাতক্ষীরা-১), পারুল (টাঙ্গাইল-৮), অন্তরা সেলিমা হুদা (মুন্সীগঞ্জ-১) ও রুবিনা আক্তার রুবি (ঢাকা-৯)।
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: ফাহমিদা হক সুকন্যা (ঢাকা-১৮), নূর জাহান বেগম (ঢাকা-৭) ও রোকেয়া বেগম (ময়মনসিংহ-১)।
বিএনএফ থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা: মমতাজ সুলতানা আহমেদ (মুন্সীগঞ্জ-৩), সাদিকুন নাহার খান (ঢাকা-১১) ও শাহেরা বেগম (কুমিল্লা-৪)। গণফ্রন্ট থেকে প্রার্থী হয়েছেন, তাহমিনা আক্তার (ঢাকা-৯) ও সৈয়দা লিমা হাসান (গোপালগঞ্জ-৩)। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন, আফরিনা পারভীন (বগুড়া-৩) ও মিরানা জাফরিন চৌধুরী (নরসিংদী ৩)।
এছাড়া বিএনএমের হয়ে পাবনা-২ আসনে ডলি সায়ন্তনী, গাইবান্ধা-১ আসনে আইরিন আক্তার কল্যাণ পার্টির, নড়াইল-১ আসনে শামীম আরা পারভীন ইয়াসমিন জাতীয় পার্টির (জেপি), পাবনা-১ আসনে পারভীন খাতুন জাসদের, ঢাকা-১৯ আসনে আইরিন পারভীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন।
এর বাইরে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনে ২৬ জন নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। তারা হলেন- আশা মনি (ঠাকুরগাঁও-৩), মার্জিয়া সুলতানা (নীলফামারী-৩), তাকিয়া জাহান চৌধুরী (রংপুর-৬), মাসুমা আক্তার (গাইবান্ধা-২), ফারজানা রাব্বী বুবলী (গাইবান্ধা-৫), শাহজাদী আলম লিপি (বগুড়া-১), চন্দনা হক (নড়াইল-১), বিউটি বেগম (বগুড়া-২), মাহফুজা আকরাম চৌধুরী (নওগাঁ-৩), শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া (রাজশাহী-১), মুনিয়া আফরিন (ঝিনাইদহ-১), ফাতেমা জামান সাথী (খুলনা-৩), নাজনীন আলম (ময়মনসিংহ-৩), সেলিমা বেগম (ময়মনসিংহ-৬), কানিজ ফাতেমা (ময়মনসিংহ-৮), জান্নাতুল ফেরদৌস আরা (নেত্রকোণা-১), সোহানা তাহমিনা (মুন্সীগঞ্জ-২), চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিন (মুন্সীগঞ্জ-৩), সাবিনা আক্তার তুহিন (ঢাকা-১৪), আফরোজা সুলতানা (নরসিংদী-২), তাহমিনা বেগম (মাদারীপুর-৩), জয়া সেন গুপ্ত (সুনামগঞ্জ-২), আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী (হবিগঞ্জ-১), আঞ্জুম সুলতানা (কুমিল্লা-৬) চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন লুবনা (লক্ষ্মীপুর-২) এবং মাহমুদা বেগম (লক্ষ্মীপুর-৪)।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি সাধারণ ছুটি ঘোষণা
ট্রান্সজেন্ডার দুই প্রার্থী: এবারের নির্বাচনে ট্রান্সজেন্ডার দুই প্রার্থীও ভোটে লড়ছেন। এর মধ্যে রংপুর-৩ আসনের আনোয়ারা ইসলাম রানী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। আর গাজীপুর-৫ আসনের উর্মি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী হয়েছেন।
নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। ভোটারদের মন জয়ের প্রতিযোগিতা একচুলও পিছিয়ে থাকতে চান না নারী প্রার্থীরাও। সংসদীয় এলাকার আনাচে-কানাচে ছুটে যাচ্ছেন তারা।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর প্রথম নির্বাচন ১৯৭৩ সালে মাত্র দু’জন নারী প্রার্থী ছিলেন। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত দেশে মোট ১০টি নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭৩ সালে মোট নারী প্রার্থী ছিলেন ২ জন, ’৭৯ সালে ১২ জন, ’৮৬ সালে ১৩ জন, ’৯১ সালে ৩৯ জন, ’৯৬ সালে ৩৭ জন, ২০০১ সালে ৩৮ জন, ২০০৮ সালে ৫৬ জন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬৮ জন নারী প্রার্থী ছিলেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই ভোটের মাঠে নেমেছেন সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী। সবশেষ গত নির্বাচনের তুলনায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৩৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।