রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশি ঋণ নেওয়ার উদ্যোগ
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের কারণে বিপর্যয়ের শিকার স্থানীয়দের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে এক বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পেতে চাইছে সরকার। আন্তর্জাতিক উৎস থেকে অর্থায়ন কমে আসায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পর এবার প্রথমবারের মতো ঋণ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এর আগে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিদেশি অনুদান নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন অনুদান আসা কমেছে। ছয় বছরের বেশী বয়সী প্রত্যেকের জন্য আগে ১২ ডলার বরাদ্দ থাকলেও এখন নেমে এসেছে ৮ ডলারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের। অনুদান সংগ্রহের পাশাপাশি প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করায় জোর দিচ্ছেন তারা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অনুদান ৪৬৫ মিলিয়ন ডলার ও ঋণ ৫৩৫ মিলিয়ন ডলার চূড়ান্ত করতে আলোচনা শুরু হয়েছে। গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সভায় ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ৩১৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান ও ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার ঋণসহ ৭০০ মিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন: জটিলতায় বিদেশে উচ্চশিক্ষা, পথ দেখাচ্ছে দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়
আর ১৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণসহ ৩০০ মিলিয়ন ডলার দিতে আশ্বাস দিয়েছে এডিবি। সভায় ইআরডির সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান কমে আসায় ঋণ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
যদিও রোহিঙ্গাদের জন্য ঋণ নিলে দেশের ওপর ঋণের চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান। এ অর্থনীতিবিদ গণমাধ্যমকে বলেন, মানবিক সহায়তা বাবদ চলতি বছর ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার চাইলেও ৪৫ শতাংশ পাওয়া গেছে।সহায়তা কমায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার কারণে অর্থনীতিতে চাপ বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বেকারত্ব বাড়ছে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মত তার।