স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এখন সবেচেয়ে জরুরি: ড. ইউনূস
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এখন সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে মনে করেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এ কাজে কোনোরকম বিলম্ব কিছুতেই আর গ্রহণযোগ্য নয়। বুধবার (২২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার বিরোধ বহু পুরোন একটি সমস্যা। ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি ইসরাইলের আচরণ সমস্যাটি ক্রমেই আরো জটিল করে তুলছিল এবং একটি বিষ্ফোরণ অব্যশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছিল। কিন্তু যা ঘটলো তা একটি সভ্য সমাজে কোনো বিচারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, এই সমস্যার এখন একটিই সমাধান, আর তা হলো দুটি আলাদা রাষ্ট্র সৃষ্টি, যে বিষয়ে জাতি সংঘের একটি সিদ্ধান্ত থাকলেও তা বাস্তবায়িত করা হয়নি। এই এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
‘‘দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের জাতিসংঘের এই দীর্ঘ-উপেক্ষিত সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নই এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। তা না হলে পরিস্থিতি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে তা কেউ জানে না। বর্তমান পরিস্থিতি পুরো অঞ্চলে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা পৃথিবীতে।’’
বিবৃতিতে ড. ইউনূস বলেন, একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এখন সবচেয়ে জরুরী বিষয়। আর এটি প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ কাজে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত অগ্রসর হলে অন্যরাও তাকে অনুসরণ করবে। বাইডেন প্রশাসনকে অবিলম্বে এই অত্যন্ত জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটিতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমি এই বিরোধের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে অবিলম্বে বৈরিতা অবসানের আহ্বান জানাচ্ছি। এই ভয়ংকর সংকটের মধ্যে নিপতিত নিরাপরাধ শিশু ও বেসামরিক মানুষদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের সুরক্ষা দিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি।
‘‘দুর্দশাগ্রস্ত জনসাধারণের নিকট জরুরী মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়া এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের জীবন রক্ষা, মর্যাদার সুরক্ষা এবং সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করার উপর আমাদের সম্পূর্ণ দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে।’’
বিবৃতিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসনু, আমরা সকলেই মানুষের দুর্দশার অবসান ঘটাতে, দুর্দশাগ্রস্তদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করি। দ্রুততম সময়ে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় সকল আয়োজন সম্পন্ন করি।
তিনি আরও বলেন, এই দিনে এবং এই যুগে আমাদের সকলেরই সম্মিলিতভাবে এই বোধোদয় হওয়া উচিত যে, যুদ্ধ ও রক্তপাত আধুনিক সভ্যতার মূল্যবোধ ও অগ্রগতির সাথে একেবারেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। হত্যা ও ধ্বংসের এই অর্থহীন তান্ডবলীলা সারা বিশ্ব ব্যথিত হয়ে দেখছে।