২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:১৬

নেত্রকোনায় প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি গঠন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

  © সংগৃহীত

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদস্য হিসেবে থাকার কথা। তবে এই উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে একজন সহকারী শিক্ষককে সদস্য করা হয়েছে। মূলত তার পদবি সহকারী শিক্ষক। বেতন ভাতাও তুলছেন সহকারী শিক্ষকের। রানা আসিফ ওসমান সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র।

এ ঘটনায় উপজেলার একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা একে অপরকে দায়ী করছেন।

একাধিক প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপজেলায় অসংখ্য প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। অথচ স্বজনপ্রীতি রক্ষায় নিয়ম ভঙ্গ করে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অসম্মানের।

ওই শিক্ষকের নাম মুহাম্মদ রানা আসিফ ওসমান। তিনি উপজেলার মানশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের ভাগ্নে হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৬ সদস্য বিশিষ্ট  মোহনগঞ্জ  উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে উপদেষ্টা, উপজেলা চেয়ারম্যানকে কমিটির চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান,  দু’জন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন উপজেলা প্রকৌশলী, পৌরমেয়র, একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, দু’জন শিক্ষানুরাগী, একজন  সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,  উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর ও একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

তবে নিয়ম অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদস্য হওয়ার কথা থাকলেও গত ৯ নভেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান অনুমোদিত মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষককে সদস্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি গঠন করেন। সেখান থেকে যে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে আমি শুধু সেটা অনুমোদন করেছি। রানা আসিফ সহকারী শিক্ষক। তবে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে থাকায় আমরা তাকে প্রধান শিক্ষকই মনে করি। 

নিয়মানুযায়ী এমনটা মনে করা যায় কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে সংশোধন করা হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, রানা আসিফ পদের দিক থেকে সহকারী শিক্ষকই। তবে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। সরকার চলতি দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকদের আর সহকারী হিসেবে ফিরিয়ে নিবে না হয়তো। নিয়মের ব্যত্যয় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সুপারিশে রানা আসিফকে সদস্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউএনও ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, রানা আসিফ যে সহকারী শিক্ষক এটা জানা ছিল না। শিক্ষা কর্মকর্তাও এটা বলেননি। বিষয়টা নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব।