নেশার জন্য মেয়ের বিয়ের কথা বলে টাকা তুলতেন তিনি
মেয়ের বিয়ের জন্য ৫ হাজার টাকা ধার নিতে আত্মীয়ের কাছে এসেছিলেন এক অসহায় বাবা। কিন্তু টাকা পাননি। টাকা না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় হাঁটছেন আবার কারোর সঙ্গে দেখা হলে এসব দুঃখের কথা বলে কান্নাকাটিও করছেন। এমন কথা শুনে মানবিকতা দেখিয়ে আবেগী হয়ে অনেকেই তাকে সহযোগিতাও করছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিওয়া অসহায় এক ব্যক্তি তার মেয়ের বিয়ের জন্য ৫ হাজার টাকা দরকার বলে জানাচ্ছেন। এমন কথা শুনে মানবিকতা দেখিয়ে ভিডিও করা ব্যক্তি তাকে ৬ হাজার টাকা দেন।
কিন্তু সেই ব্যক্তি টাকা নিয়ে গতকাল ৩ নভেম্বর রাতে মাওয়া ঘাটে গিয়ে মদ খেয়েছেন বলে জানা গেছে। তার প্রতারণার স্বীকারোক্তিমূলক আরেকটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ব্যক্তি একজন প্রতারক বলেও ওই ভিডিওতে স্বীকার করেছেন।
শনিবার (৪ নভেম্বর) একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। সেখানে মেয়ের বিয়ের কথা বলে টাকা নেওয়া ব্যক্তি খালি গায়ে একটা গামছা গলায় দিয়ে বসে সেসব কথার উত্তর দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে নিজেই নিজের কান ধরে মাফ চাইছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়—ভিডিও করা ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করছেন- তুমি গুলশান এলাকায় যাইয়া ৬ হাজার টাকা যে ফেইসবুকওয়ালার কাছ থেকে নিছো মিথ্যা কথা বইলা, সেই টাকা দিয়া কেন মদ খাইছো? উত্তরে সে কান ধরে বলছে- স্যার আমার বউডা মইরা গেছে দেইখা আমি মদ খাইছি। এসময় ভিডিও করা ব্যক্তি তাকে বলেন, তুমি তোমার মেয়ের বিয়ের কথা বইলা কান্নাকাটি করে টাকা আনছ না? তখন সেই প্রতারক উত্তরে বলেন, হ, কাঁদে কাঁদে টাকা আনছি। তখন ওই ব্যক্তি আবার বলেন, কাইন্দা কাইটা টাকা আইনা এই মাওয়া ঘাটে আইসা কেন মদ খাইছো তুমি? উত্তরে প্রতারক বলেন, খাইছি আর খাবনা। এসময় মেয়ের কথা বলে সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে এই ব্যবসা করিস। মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কেন এগুলো করে সেটাও জানতে চান।
এ সময়ে ভিডিও করা ব্যক্তি সবার উদ্দেশ্য বলেন, আর কেউ ওরে টাকা দেবেন না। ও নানান জায়গায় চুরি করে আর মদ-টদ খায় আর মিথ্যা কথা বলে বলে টাকা নেয়।
এর আগে, নাইম নগর (Nayeem Nagar) নামের একজন কমেন্ট করেছেন, ভাই এই ব্যক্তি একজন প্রতারক। ৩-৪ মাস আগে আমার কাছেও ঠিক এই কথাগুলো বলেছিল। আমিও তাকে বেশ কিছু টাকা দিয়ে তার মেয়ের কাজে বিয়ের শরিক হয়েছিলাম। আজকে তার এই নাটক দেখে নিজের কাছেই কষ্ট লাগছে। যাইহোক, এসব বাটপারের কাছে- যারা প্রকৃত অভাবী তারা হেরে যায়।
সিরাজগঞ্জে মানবিক কাজ করা ‘ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রিন সিরাজগঞ্জ’ এর প্রতিষ্ঠাতা আশিক আহমেদ তার ফেসবুকে দুটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এসবের জন্য এখন মানবিক কাজ করাই দায়।’