আজ মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

মেট্রোরেল
মেট্রোরেল  © সংগৃহীত

আজ শনিবার (০৪ নভেম্বর) উত্তরা-মতিঝিল রুটে মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন দুপুর ২টায় মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এই উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চালু হবে মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) পুরো অংশ। মতিঝিলে এমআরটি লাইন ৫-এর নির্মাণকাজের উদ্বোধনেরও কথা রয়েছে আজ। 

এখন পর্যন্ত মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ চালু থাকায় পুরো নগরবাসী তেমন ‍সুফল পাচ্ছিলেন না। গত বছরের ডিসেম্বরে উদ্বোধনের পর অনেকটা শখের পরিবহন হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছে মেট্রোরেল। আগামীকাল রোববার থেকে মেট্রো চলবে গণপরিবহনের মতো। উত্তরা-মতিঝিল অংশের পুরো পথে মেট্রোরেল চালু হলে যাত্রীরা এর প্রকৃত সুফল পাবেন। যানজন থেকে বাঁচবেন নগরবাসী। কমে আসবে ভোগান্তি। বাঁচবে কর্মঘণ্টা। এই পুরো পথে যাত্রী প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।

আগামীকাল রোববার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রো। তবে প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও সব স্টেশন একসঙ্গে চালু হচ্ছে না। আগারগাঁও-মতিঝিল পথের সাতটি স্টেশনের ফার্মগেট, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে ট্রেন থামবে। এই তিনটি স্টেশন চালু হলে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশনসহ মোট ১২টি স্টেশন এখন চালু থাকবে। বাকি থাকবে বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন। তবে স্টেশনগুলোর কাজ শেষ হলে দ্রুতই খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন চালু হবার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু টানেলেও দেখা দিল তীব্র যানজট

মতিঝিল পর্যন্ত আপাতত সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। আস্তে আস্তে এই পথে ট্রেন চালানোর সময় বাড়ানো হবে। যদিও আগারগাঁও পর্যন্ত যেভাবে ট্রেন চলছিল সেভাবেই চলবে। মেট্রো রেল পরিচালনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, প্রথম ধাপের মতোই পরিচালন ও পরীক্ষা—এই তত্ত্বে পুরো পথ চালু করা হবে। ধীরে ধীরে যাত্রীদের অভ্যাস তৈরি হলে আস্তে আস্তে সময় ও স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেট্রো রেল পুরোপুরি চালু হওয়ায় ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। ছয়টি কোচসংবলিত প্রতিটি একমুখী ট্রেন প্রতিবারে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। এই পথে দিনে ২০টি ট্রেন চলাচল করবে। আরো চারটি ট্রেন বিকল্প হিসেবে প্রস্তুত থাকবে। মাঝের চার কোচের প্রতিটিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৩৯০ জন। দুই পাশের ট্রেইলার কোচের (ইঞ্জিন) প্রতিটিতে সর্বোচ্চ যাত্রী ধারণক্ষমতা ৩৭৪ জন। নারী যাত্রীদের জন্য সব ট্রেনেই থাকছে আলাদা কোচ।

উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পথ ২১.২৬ কিলোমিটার। মেট্রো রেলের এই পুরো পথে ১৭টি স্টেশন থাকবে। প্রথম ধাপে চালু হয়েছে আগারগাঁও পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১১.৭৩ কিলোমিটার অংশ। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত অংশে মেট্রোরেল চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে মতিঝিল পর্যন্ত পথ ২০.১০ কিলোমিটার, যা আজ উদ্বোধন করা হবে। আর ২০২৫ সালের শেষের দিকে কমলাপুর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পটির মোট ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের কথা থাকলেও যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনায় করে সেটি কমলাপুর পর্যন্ত এক দশমিক ছয় কিলোমিটার বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।


সর্বশেষ সংবাদ