০৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫২

গণদাবি মেনে দেশকে রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব: ইউট্যাব

ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)  © লোগো

গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে পুলিশ-ক্ষমতাসীনদের হামলা, শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার, সারাদেশে অব্যাহত গ্রেপ্তার-খুন ও মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। গণদাবি মেনে দেশকে সংঘাত থেকে রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব বলেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে সংগঠনটি।

শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান।
 
বিবৃতিতে প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. আমিনুল হক, ইউট্যাবের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চারুশিল্পী সঞ্জয় দে রিপনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের চলমান মহাসমাবেশ ও হরতাল-অবরোধে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে বেআইনি ও নির্মমভাবে হত্যা, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসায় পুলিশি তল্লাশির নামে আসবাবপত্র ভাঙচুর, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, সারাদেশে অব্যাহত গ্রেপ্তার-খুন ও মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। 

বিবৃতিতে ইউট্যাবের নেতারা বলেন, একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ কর্তৃক গুলি, টিয়ারশেল, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং জাতীয়তাবাদী যুবদলের একজন নেতা নিহত ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত এবং গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। এরপর দাবি আদায়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিএনপিসহ প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল।

তারা আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সভা-সমাবেশ করা যেখানে প্রতিটি ব্যাক্তি ও রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্রীয় বাহিনী হিসেবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তব্য হলো নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটা না করে বর্তমান ভোটারবিহীন অনির্বাচিত সরকারের নির্দেশে পুলিশ অসাংবিধানিক ও অপেশাদার আচরণ করছে। সরাসরি মিছিল-সমাবেশে নিরীহ গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ করছে। দেশজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে অন্যায়ভাবে তল্লাশিসহ ভাঙচুর শুরু করছে। সিনিয়র থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে পাইকারিভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ধরনের আচরণ মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী করতো। বর্তমান সরকারও তাদের অনুগত পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিএনপি ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর পাকিস্তান বাহিনীর মতো নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জুলুমের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। এক্ষেত্রে দেশকে পরিকল্পিতভাবে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
 
জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিলে তারা ক্ষুব্ধ হওয়া স্বাভাবিক বলে তারা উল্লেখ করেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কিভাবে ক্ষমতায় এসেছে তা সবারই জানা। বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচন! এবং ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স পূর্ণ করে ফেলা হয়েছে। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তাই এবার তারা ভোটাধিকার আদায়ে রাজপথে নেমে সর্বাত্মক আন্দোলন করছেন। এক্ষেত্রে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। অন্যদিকে সরকারও জনগণের দাবি আমলে নিচ্ছে না। ক্ষমতাসীনদের ইন্ধনে একদল উচ্ছৃঙ্খল দুর্বৃত্ত দেশে আবারও গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, জ¦ালাও-পোড়াওয়ের সুযোগ নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতময় ও দুবির্ষহ হচ্ছে। যা বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে খাটো করছে। 

ইউট্যাবের এই শীর্ষ দুই নেতা আরও বলেন, আমরা শিক্ষক সমাজ মনে করি, জনগণের দাবি মেনে নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকার পদত্যাগ করলে দেশকে সংঘাতের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এর প্রধান দায়িত্ব সরকারের। নেতৃদ্বয় সারাদেশে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন, গুম-খুন ও মিথ্যা মামলা বন্ধ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীর নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান। তা না হলে দেশে কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী থাকবে বর্তমান সরকার।