০৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৪১

জেল হত্যাকাণ্ড: দণ্ডপ্রাপ্ত অনেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে

  © সংগৃহীত

আজ ৪৮ বছর পার হলো ইতিহাসের কলঙ্কজনক জেল হত্যাকাণ্ডের। সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায় শেষ হলেও দণ্ডপ্রাপ্ত অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ মামলার বেশ কয়েকজন আসামি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলারও আসামি ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামিদের অনেকেরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে জেল হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অধিকাংশ আসামিই পলাতক। ১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে। 

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান এ মামলার রায় দেন। এরপর ২০০৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের রায় দেন হাইকোর্ট। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়। পরে আপিলের দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেন। ওই বেঞ্চের অপর সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. ইমান আলী।

রায়ে ২০ আসামির মধ্যে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। মুত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার আবুল হাশেম মৃধা। এই মামলায় সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকে খালাস দেয়া হয়। জেল হত্যা মামলার ১০ জন আসামি এখনো পলাতক। তারা হলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোসলেম উদ্দিন, আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মারফত আলী শাহ ও আবুল হাসেম মৃধা, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী, আহমদ শরিফুল হোসেন, কিসমত হোসেন ও নাজমুল হোসেন আনসার। পলাতক আসামিরা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে।