পুলিশের ধাওয়ায় কর্মী নিহত, অবরোধের মধ্যে সিলেটে হরতালের ডাক যুবদলের
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক কর্মী নিহতের জেরে আগামীকাল বুধবার সিলেটে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ হরতালের ডাক দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় হরতালের সমর্থনে জিন্দাবাজার এলাকায় মিছিলও করে যুবদল।
হরতালের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, পুলিশ হেফাজতে যুবদল কর্মী জিল্লুর রহমান নিহতের জেরে যুবদল বুধবার সিলেটে হরতাল ডেকেছে। আমরা এতে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছি।
তিনি হরতালের পাশাপাশি বিএনপির ডাকা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচিও চলমান থাকবে।
জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধের প্রথম দিন ছিল আজ মঙ্গলবার। আগামীকাল বুধবার ও পরের দিন বৃহস্পতিবারও দেশব্যাপী এই কর্মসূচি চলবে। এদিকে আজ সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার এলাকায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বাইক উল্টে আহত হন যুবদল কর্মী জিল্লুর রহমান (৪০)। পরে মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত জিলু সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার মদন গৌরী এলাকার এলাই মিয়ার ছেলে ও গোলাপগঞ্জ যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বিএনপির ডাকা অবরোধ সফলে ১০টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের লালাবাজারে অবস্থান নেন জিলু। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে মোটরসাইকেলসহ পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরবর্তীতে তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় জিলুর সহকর্মী সালাহউদ্দিন গুরুতর আহত হয়েছে। সালাহ উদ্দিন দক্ষিণ সিলাম ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমে অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানান, অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার যান গোলাপগঞ্জ যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য দিলু আহমদ দিলু। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ধাওয়া দেয়। এতে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন দুজন। পরে জিলুকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আনা হয়। বেলা দুইটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর আসে।
সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ জানান, জিলুকে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এরপর তার মৃত্যুর খবর এসেছে। জিলুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জিলুসহ দুইজন হাসপাতালের আইসিইউতে ছিল। এর মধ্যে জিলু মারা গেছে।
তবে জিলুকে আটকের অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, সকালে জিলুসহ কয়েকজন লালাবাজার এলাকায় পিকেটিং করছিলেন। এসময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে দ্রুত পালানোর সময় জিলু মোটরসাইকেল একটি গাছের সাথে ধাক্কা খায়। এতে দুজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিলু মারা যান।