সর্বশেষ সংসদীয় বৈঠকে এমপিদের যে নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের শেষ বৈঠকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের লেভেল ৯-এ সরকারি দলের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই বার্তা দেয়া হয়।
একাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের এটি অষ্টম ও শেষ সভা। বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের এমপিদের নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যেন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারে সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া সরকার পতনের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির বিষয়ে দলীয় এমপিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন দলীয় সভাপতি।
বৈঠকে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচি, ২৮শে অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি’র মহাসমাবেশসহ তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেন কয়েকজন এমপি।
তারা জানান, নির্বাচনকে টার্গেট করে বিরোধী দলগুলো দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। প্রধানমন্ত্রী এসব নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে দলীয় প্রধানের বার্তা প্রসঙ্গে নরসিংদী-৩ আসনের এমপি জহিরুল হক ভুঁইয়া মোহন বলেন, দলীয় প্রধান বলেছেন, একটি মহল নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। আমরা একটা ফ্রি, ফেয়ার নির্বাচন করবো। নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি আসবে না এটা তাদের বিষয়। তবে নির্বাচনে বিএনপি আসবে এটা ধরে নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার জন্যই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কেউ যেন মোনাফেকি না করে। প্রধানমন্ত্রী নিজের নির্বাচনী এলাকায় এমপিদের অবস্থান তৈরির নির্দেশ দিয়ে বলেন, এলাকার প্রতিটি ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। প্রচার করতে হবে।
বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে এই ষড়যন্ত্র চলছে বিষয়টি এমন না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তৃতীয় কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় এনে দেশকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার কথা তুলে ধরে বলেন, সম্প্রতি লুলা ডি সিলভার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, যেভাবে ব্রাজিলকে গুছিয়ে রেখে গিয়েছিলাম এসে দেখি ছারখার করে দিয়েছে। এখন আমাদের দেশেও যদি অন্য কেউ ক্ষমতায় আসে দেশটা ধ্বংস করে দেবে। সুতরাং সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। যোগ্যতা দিয়ে এবার মনোনয়ন পেতে হবে। এই সংসদে যারা আছেন তাদের অনেকে মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। তাতে কেউ দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা বা বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড করবেন না। যারা করবে তার রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে। কাউকে চেয়ার দেয়া হবে না।
কয়েকজন এমপি জানান, সভায় শামীম ওসমান বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে বলেন, ওরা থেমে নেই। সারা দেশে আঞ্চলিক মিডিয়াগুলোতে জামায়াত অর্থায়ন করছে। সরকার, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের এমপি, নেতা, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই লিখছে। প্রয়োজনে আমাকে মনোনয়ন দিয়েন না কিন্তু দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যিনি জিতে আসতে পারবেন তাকে জিতে আসতে হবে। হাজার বছরে বঙ্গবন্ধু এসেছেন একজন ভবিষ্যতে লাখ বছরে একজন বঙ্গবন্ধু আসবেন কিনা সন্দেহ আছে। কিন্তু এখন প্রতি জেলায় জেলায় খোন্দকার মোস্তাকরা আছে। এরা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য কাজ করছে। এই মোস্তাকদের চিহ্নিত করতে হবে, এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।