দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: হাইকোর্ট
দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রবিবার (২২ অক্টোবর) হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত পাঁচ বিএনপি নেতার আবেদন খারিজ করে রায় দেন বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর দেয়া রায়ে ৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
আবেদনকারী ওয়াদুদ ভুইয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফখরুল ইসলাম, মো.আব্দুল ওহাবের পক্ষে ছিলেন মো.ওয়াজেদ আলী, মো.মশিউর রহমানের পক্ষে ছিলেন মো.আমিনুল হক, কেএইচ বাহার রুমি ও মাহবুব শফিক, এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ছিলেন রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করিম, খায়রুল আলম চৌধুরী ও তানভীর হোসেন খান, আমান উল্লাহ আমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.আরিফুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, তৎকালীন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.খুরশীদ আলম খান, এ কে এম ফজুলল হক খান।
খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, নৈতিক স্খলনের মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের অযোগ্য হন। সংবিধানের এ সংক্রান্ত ৬৬(২)(ডি) এর ব্যাখ্যা দিয়ে আদালত একটি রায় দিয়েছেন। রায়ে বলেছেন-সাজা কখনো স্থগিত হয় না। দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কিছু ব্যক্তি বিচারাধীন আপিলে একটি দরখাস্ত দিয়েছেন সাজা স্থগিতের জন্য। কারণ স্থগিত না হলে তারা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সেটার ব্যাখ্যা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দণ্ড বহাল থাকবে কাজেই সাজা কখনো স্থগিত হয় না।
এই পাঁচ আবেদনকারীদের বিষয়ে আদালত বলেছেন, আবেদনকারীদের জামিন দেওয়া হয়েছে, তবে এটি বলা যায় না যে তারা খালাস পেয়েছে বা তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বা তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বা শেষ পর্যন্ত তারা দোষী সাব্যস্ত ও সাজা থেকে খালাস পেয়েছে। সুতরাং সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ডিতদের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা উপযুক্ত আদালতে বাতিল হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। আপিল আদালতে কারো জামিন হলে অথবা কোনোভাবে সাজা স্থগিতের আদেশ হলে দণ্ডিতদেরকে সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্যতার দায় থেকে অব্যাহতি দেয় না।