স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এখন সবচেয়ে জরুরি কাজ: ড. ইউনূস

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।   © সংগৃহীত

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এখন সবচেয়ে জরুরি কাজ। কোনো রকম বিলম্ব কিছুতেই আর গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার ইউনূস সেন্টার থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার বিরোধ বহু পুরোনো একটি সমস্যা। ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি ইসরায়েলের আচরণ সমস্যাটি ক্রমেই আরও জটিল করে তুলছিল এবং একটি বিস্ফোরণ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছিল। কিন্তু যা ঘটল তা একটি সভ্য সমাজে কোনো বিচারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই সমস্যার এখন একটিই সমাধান, আর তা হলো দুটি আলাদা রাষ্ট্র সৃষ্টি, যে বিষয়ে জাতিসংঘের একটি সিদ্ধান্ত থাকলেও তা বাস্তবায়িত করা হয়নি। এই এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। দুটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের জাতিসংঘের এই দীর্ঘ-উপেক্ষিত সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নই এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। নতুবা পরিস্থিতি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে তা কেউ জানে না। বর্তমান পরিস্থিতি পুরো অঞ্চলে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা পৃথিবীতে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয়। আর এটি প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ কাজে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত অগ্রসর হলে অন্যরাও তাকে অনুসরণ করবে। বাইডেন প্রশাসনকে অবিলম্বে এই অত্যন্ত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটিতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি এই বিরোধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে অবিলম্বে বৈরিতা অবসানের আহ্বান জানাচ্ছি এবং এই ভয়ংকর সংকটের মধ্যে নিপতিত নিরপরাধ শিশু ও বেসামরিক মানুষদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের সুরক্ষা দিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি। দুর্দশাগ্রস্ত জনসাধারণের নিকট জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের জীবন রক্ষা, মর্যাদার সুরক্ষা এবং সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করার ওপর আমাদের সম্পূর্ণ দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে।’

দুর্দশাগ্রস্তদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সহায়ক ও অর্থপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করি এবং দ্রুততম সময়ে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় সকল আয়োজন সম্পন্ন করি। আমাদের সকলেরই সম্মিলিতভাবে এই বোধোদয় হওয়া উচিত যে যুদ্ধ ও রক্তপাত আধুনিক সভ্যতার মূল্যবোধ ও অগ্রগতির সঙ্গে একেবারেই সংগতিপূর্ণ নয়। হত্যা ও ধ্বংসের এই অর্থহীন তাণ্ডবলীলা সারা বিশ্ব ব্যথিত হয়ে দেখছে এবং ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি, সংহতি, সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থানের একটি ভবিষ্যৎ তৈরির জন্য কাজ করা এখন আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব।’


সর্বশেষ সংবাদ