বাবাকে মারধর করায় মেয়েকে কলেজ থেকে বহিষ্কার
চাঁদপুরে মনির হোসেন খান (৭৫) নামে বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের ঘটনায় একটি কলেজে মাস্টাররোলে কর্মরত মেয়ে ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে (৩২) বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায় ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে অনেকেই ওই কলেজের শিক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। মূলত তিনি মাস্টার রোলের একজন কর্মচারী এবং ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট পদে কর্মরত। তিনি কলেজের শিক্ষাসংক্রান্ত কোনো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ভিডিওটিতে প্রচারিত ঘটনাটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়। বিষয়টি বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়াধীন। এমতাবস্থায় কলেজ প্রশাসন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তারপরও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অধিকতর অবগতির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এর আগে গত শুক্রবার চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডস্থ কলমতর খান বাড়িতে বৃদ্ধ বাবাকে মারধর করেন ফাতেমা। ঘটনাটি কেউ একজন ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, গোসল করাতে নিয়ে বাবা মনির হোসেনকে মারধর করছেন তার মেয়ে ফাতেমা। অসহায় বাবা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। কখনও চাপকল চেপে পানি তোলার চেষ্টা করছেন। ভিডিও ভাইরালের পর পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফাতেমাকে আটক করে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুসহীন আলম বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বাবাকে নির্যাতনের জন্য পুলিশ তার মেয়েকে আটক করে। সকালে তার বাবা থানায় এসেছে। তবে তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি সন্তানের ওপর কোনো অভিযোগ না রেখে ক্ষমা করে দেন। তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। বাবার অনুরোধে এবং তার চাওয়াকে সম্মান করে মেয়ে ফাতেমা আক্তার শিল্পীর কাছ থেকে অঙ্গিকার নেওয়া হয়। যাতে আগামীতে সে তার বাবার ওপর কোনো প্রকার নির্যাতন না করে। পরে পুলিশ ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে তার বাবা মনির হোসেন খান ও মাতা রোকেয়া বেগমের জিম্মায় দেওয়া হয়। রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ফাতেমা আক্তার চাঁদপুর সদর মডেল থানা হেফাজতেই ছিল।