আন্তঃক্যাডার বৈষম্য: শিক্ষা ক্যাডারদের কর্মবিরতি ২ অক্টোবর
দীর্ঘদিন নানা ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আসছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের এসব দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় এবার কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ অক্টোবর কর্মবিরতি পালন করবেন তারা।
মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জেলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের দাবিগুলো হলো- প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সব যোগ্য কর্মকর্তার পদোন্নতি, পদসৃষ্টি, স্কেল আপগ্রেডেশন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা ও শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের প্রত্যাহার। এসব দাবিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শিক্ষা ভবনে সামিয়ানা টাঙিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
এর আগে গত রোববার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি শাহেদুল খবির চৌধুরী ও মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্লা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টি হলেও শিক্ষা ক্যাডারকে বিশেষায়িত পেশা হিসেবে গড়ে তোলা হয়নি। বঞ্চনা আর বৈষম্যের মাধ্যমে এ পেশার কার্যক্রমকে সংকুচিত করা হয়েছে। এ পেশাকে গ্রাস করছে অদক্ষ অপেশাদাররা যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনের পরিপন্থী। দেশের সার্বিক শিক্ষার উন্নয়নকল্পে শিক্ষা ক্যাডারের নানাবিধ সমস্যা ও যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন থাকা সত্ত্বেও সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করে যোগ্য সকল কর্মকর্তার পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অর্জিত ছুটি সমস্যা আজও সমাধান হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের দাবি পূরণে আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। পদ সৃজনের কাজ আটকে আছে ৯ বছর। পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মুহূর্তে শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন স্তরে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা আছে প্রায় ৭০০০ জন। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের অপসারণের দাবি জনিয়েছি কিন্তু সেটি করা হয়নি। উপরন্তু আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভূত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুস্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। আমরা এসকল কর্মকাণ্ডকে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামীল মনে করি।