১০ শিক্ষিকার স্বামীর ঠিকানায় বদলির আদেশ স্থগিত চান এমপি
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলি করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষিকাকে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করেছেন সংসদ সদস্য এ কে এম বাহাউদ্দিন বাহার। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পক্ষে আবেদনটি করেন।
আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান আইনজীবী এম সাঈদ আহমেদ রাজা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কে এম বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি জেলা শিক্ষা বিষয়ক কমিটিরও সদস্য। এ কারণে হাইকোর্টের আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে আবেদনটি করেছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে আদালতের আদেশপ্রাপ্তির পাঁচ দিনের মধ্যে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলি করা প্রাথমিকের ১০ নারী শিক্ষিকাকে যোগদানের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আরেক শিক্ষকের যোগদানপত্রও গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আদর্শ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ১১ জনের যোগদানপত্র গ্রহণ করতে বলা হয়েছে আদেশে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। রুলে ১১ জন শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং যোগদানপত্র গ্রহণ করার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ১১ জন শিক্ষক রিট করেন। পরে রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, রিটকারীরা বিভিন্ন জায়গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন বদলি বন্ধ থাকায় তারা বদলি হতে পারেননি। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা (সংশোধিত) ২০২২’ জারি করলে শিক্ষকরা স্থায়ী ঠিকানা ও স্বামীর ঠিকানায় বদলির আবেদন করেন।
আরো পড়ুন: নতুন শিক্ষকদের যোগদান ১৯ অক্টোবরের মধ্যে
আবেদন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত মার্চ মাসে আদর্শ সদর উপজেলায় বদলি করে অফিস আদেশ জারি করে। পরে শিক্ষকরা বদলি করা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে যান। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যোগদানপত্র গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এরপর রিটকারীরা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করেন।
পরে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক গত ১৬ জুলাই চিঠিতে যোগদানপত্র গ্রহণ করতে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন। এরপরও শিক্ষা অফিসার পদক্ষেপ নেননি। ফলে কোনো বিদ্যালয়ে কর্মরত না থাকায় রিটকারী শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ। পরে শিক্ষকরা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে আবার আবেদন করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষকরা রিট করেন।