১০ হাজার ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণে ব্যতিক্রমী চিঠি উৎসব
একটা সময় ছিল, যখন মানুষ সুখ-দুঃখ, আবেগ-অনুভূতি, প্রেম-ভালোবাসা, পরিবেশ-পরিস্থিতি সবই চিঠিতে প্রকাশ করতো। সেই চিঠির স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনতে ব্যতিক্রমী এক চিঠি উৎসবের আয়োজন করেছে রাজবাড়ী লেখক-পাঠক কেন্দ্র। সঙ্গে হয়েছে বইমেলা।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, চিঠি পাঠ ও সাত দিনব্যাপী বইমেলার উদ্বোধন করা হয়।
জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার ছাত্রছাত্রী চিঠি লেখা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ১০ হাজার চিঠির মধ্যে ভালো চিঠি লিখে প্রথম স্থান অর্জন করে অঙ্কুর কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শান্ত মোল্লা। তাকে পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা ও বই উপহার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা অরিন। তাকে পুরস্কার হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা ও বই দেওয়া হয়। তৃতীয় স্থান অর্জনকারী ১০ জনকে বই উপহার দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় হওয়া তানজিলা অরিন বান্ধবীকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছে, ‘ষষ্ঠ শ্রেণিতে যখন ভর্তি হই, তখন তোমার সাথে সখ্য। সবাইকে খুব ভালোবেসেছিলাম। শিক্ষকরাও খুব ভালোবাসতেন। একদিন বাবা জানালেন, চাকরির সুবাদে তাঁকে লন্ডনে যেতে হবে। এ কথা শুনে খুব কেঁদেছিলাম। লন্ডনে এসে তোমাদের কথা মনে পড়ছে। তোমার ছোট বোনের কথাও মনে পড়ছে। শুনেছি বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ। জ্বর হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। সাবধান থাকতে হবে।’
প্রথম হওয়া শান্ত মোল্লাও চিঠি লিখেছে বন্ধুকে। ঢাকায় গিয়ে তার কেমন লাগছে, তা তুলে ধরেছে। লিখেছে, ‘সেদিন আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। বেরিয়ে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। সে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য।’
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য দেন রাজবাড়ী মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি লাইলী নাহার, সাংবাদিক তুষার আব্দুল্লাহ, শিশুসাহিত্যিক কাকলী প্রধান, উপস্থাপিকা শুভাগতা গুহ রায়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হামিদ, কবি নেহাল আহমেদ প্রমুখ।
সেরা দুটি চিঠি পাঠ করেন সাংবাদিক তুষার আব্দুল্লাহ ও কবি বাবলু মওলা। তুষার আব্দুল্লাহ বলেন, চিঠির বাঁধাধরা নিয়ম নেই। ভালোলাগা মন্দলাগা উঠে আসে চিঠিতে। কলেজে কোনো শিক্ষকের ক্লাস ভালো লাগলে তাঁকে চিঠি লিখতেন। আবার খারাপ লাগলেও লিখতেন।