প্রচলিত শিক্ষানীতিতে ১২ বছরে শিক্ষাখাতের সমস্যা প্রকট হয়েছে: ঢাবি অধ্যাপক
২০১০ সালে প্রণীত প্রচলিত শিক্ষানীতি নিয়ে বাংলাদেশে গত ১২ বছরে শিক্ষাখাতের সমস্যা প্রকট হয়েছে, এই শিক্ষানীতি শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশে যুতসই নয়। ‘সর্বজনীন গণমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতি: বর্তমান প্রেক্ষিতে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি আন্দোলন আয়োজিত উক্ত সেমিনারে তিনি এই শিক্ষানীতি প্রণয়নে সংশ্লিষ্টদের ঘোষিত নীতির অনেক সুপারিশ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়াকেই দায়ী করেন।
কাবেরী গায়েন আরও বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে এক বছরের প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করার কথা ছিল, তা এখনো চালু করা হয়নি। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এনজিও বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে চালানো হয়, যা হয় খুব ব্যয়বহুল নয়তো নিচুমানের সেবা প্রদানকারী। এককথায় এ শিক্ষানীতি শিশুদের মানসিক-শারীরীক বিকাশের জন্য যুতসই না।
আরও পড়ুনঃ প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য ‘সুখবর’, পাবেন ৮০ শতাংশ শিক্ষা কর্মকর্তা পদ
সেমিনারে কাবেরী গায়েন মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন। এতে তিনি দেশে এ পর্যন্ত প্রনীত সকল শিক্ষানীতি তুলে ধরে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেন। কাবেরী গায়েন বলেন, গত ১০-১২ বছরে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক এবং শ্রেণিকক্ষের জন্য পৃথক পদ তৈরি করা ছাড়া, প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিন্ন মান বজায় রাখা বা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখার জন্য মন্ত্রণালয় কোনো নির্দিষ্ট আদেশ প্রচার করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, অবকাঠামোর অভাবে সর্বজনীন এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আবার পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা এবং অষ্টম শ্রেণি শেষ করে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) চালু হওয়ায় প্রক্রিয়াটি আরও জটিল হয়েছে। প্রথম থেকেই বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করে আসছেন যে, ১১-১২ বছর বয়সে পাবলিক পরীক্ষায় বসলে শিশুদের ওপর ক্ষতিকর মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে এবং তা তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করতে পারে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি আন্দোলনের আহ্বায়ক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাহমুদ সেলিম, রুস্তম আলী প্রমুখ।