ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসক-পুলিশ সংঘর্ষ, কর্মবিরতেতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন দিনের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিসসকরা। আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। এর আগে গতকাল বুধবার রাতে হাসপাতালের পুরোনো ভবনে পুলিশ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছে।
এক বিবৃতিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মাহিদুল হক অয়ন ও সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রতীক বিশ্বাস জানান, বুধবার রাত ১০টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর রোগীর স্বজন ও পুলিশ ক্যাম্পের কতিপয় সদস্য কর্তৃক ন্যক্কারজনক-বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে আজ থেকে আগামী তিন কর্মদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান দিতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে কঠোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।
হাসপাতালের পরিচালক মো. গোলাম ফেরদৌস জানান, ‘হাসপাতালে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এতে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন। তাতে সাময়িক সমস্যা হলেও হাসপাতালের স্থায়ী চিকিৎসক দিয়ে তা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
এর আগে গতকাল রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে কর্মরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহমুদুল হাসান তাঁর স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকেন। তখন অন্য রোগী দেখছিলেন। তিনি পরে আসবেন বললে পুলিশের এএসআই বাজে আচরণ করেন বলে জানান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস।
তিনি আরও জানান, এ সময় দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাসপাতালে কর্মরত আনসার সদস্যরাও এসে তর্কে জড়ান। খবর পেয়ে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম সেই ওয়ার্ডে আসেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম এএসআইকে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যান। তখন কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক পুলিশ ক্যাম্পে যান। সেখানে দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আটজন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হন। তাঁদের মধ্যে ডা. শামীম রেজা ও ডা. সাদিক গুরুতর আহত হন। তাঁদের আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে রাতেই জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহমেদ ভূঞা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় এসপি মাসুম আহমেদ ভূঞা হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্য আরিফকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনা তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন পুলিশ সুপার। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আপাতত ফাঁড়ি থেকে পুলিশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।