২৭ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৪০

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ঝুঁকিতে অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশু

হাসপাতলে ডেঙ্গু আক্রান্তু এক শিশুকের নিয়ে মা  © সংগৃহীত

দেশে এবছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যু রেকর্ড করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। গতকালও সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯ জানের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৯৬০ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক লাখ ১২ হাজার ১৮৪। এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৩৭ জন। চলতি বছর মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ নারী। 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা ও গর্ভের শিশুর ঝুঁকি বেশি। কারণ একজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে তাঁর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এ সময় সব ধরনের রোগের ঝুঁকিতে থাকেন তাঁরা। এ জন্য এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য আলাদা নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সতর্ক থাকতে হবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় ও ঋতুস্রাবকালে কোনো নারী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে নারীরা তাদের যত্ন নেয়।

চিকিৎসকরা বলছেন, নারীরা অসুস্থ হলে গুরুত্ব কম দেয়। অসুস্থ হলে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয় তারা। এসব কারণে হাসপাতালেও দেরি করে আসে। এতে জীবন নিয়ে ঝুঁকিতে পড়ে তারা। ফলে অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশু উভয়ই ঝুঁকিতে থাকে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের এক গাইনি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে শরীরে পানি কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে রক্তচাপ কমে আসে। মায়ের পাশাপাশি গর্ভের সন্তানের শরীরে রক্ত চলাচল ও পুষ্টি কমে যেতে পারে। ফলে গর্ভেই শিশুর মৃত্যু হতে পারে। অথবা অসময়ে সন্তান প্রসব হতে পারে। কিংবা সন্তানের ওজন কম হতে পারে।

যদি কোনো নারী গর্ভকালীন প্রথম বা দ্বিতীয় তিন মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তবে সেটিও আরও বিপজ্জনক। এ সময় জ্বরের কারণে মায়ের গর্ভপাত হয়ে থাকে। রক্ত বন্ধ হওয়ার যে প্রক্রিয়া, সেটা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কারো কারো দাঁতের গোড়া দিয়ে, চোখ দিয়ে, নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। গর্ভবতী মায়ের এ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে মা ও সন্তান দুজনেরই মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রেজাউল করিম