ক্লাসে ঢুকে শিক্ষিকাকে পেটালেন যুবলীগ নেতা
শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সামনে এক শিক্ষিকাকে বেধড়ক পেটালেন যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান। শুধু শ্রেণিকক্ষে নয়, শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে বিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনে মারধর করে আহত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের মনিরামপুর পৌর এলাকার দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে।
মিজানুর রহমান পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাইপো এবং স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। নিজের ছেলেকে শিক্ষকদের বেসিনে হাত ধুতে নিষেধ করায় এ ঘটনা ঘটান মিজান।
মারধরের শিকার শিক্ষিকা ছালিমা আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ঘটনার দিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছিলো। আমি একটি কক্ষে পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলাম। এসময় মিজানুর রহমানের ছেলে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত বেসিনের ট্যাপ খোলার চেষ্টা করছিলো। দেখতে পেয়ে তাকে নিষেধ করি। ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে নালিশ করে। মুহূর্তের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মা ও দাদা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেনকে ডেকে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষিকাকে পেটানো হয়নি। তার সঙ্গে ‘মুখ কালাকালি’ হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইসমত আরা পারভীন বলেন, ‘এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আহম্মেদ শফি বলেন, ‘ঘটনাটি নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যাব। ন্যায়বিচার না পেলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষক সমিতি।
মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’