শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র্যাগিং প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশ
দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন মাসের মধ্যে বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধে করা চূড়ান্ত নীতিমালা পাঠানো এবং ছয় মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নীতিমালার নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের পর তা নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এক শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে পাঁচ বছর আগে দেওয়া স্বতঃপ্রণোদিত রুল এবং অপর এক শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দুই বছর আগে দেওয়া রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেওয়া হয়।
এর আগে বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধে চূড়ান্ত নীতিমালার গেজেটের কপি হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। গত ২৯ জুন গেজেট জারি করা হয়েছে। চূড়ান্ত নীতিমালায় বুলিং-র্যাগিংয়ের অপরাধে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং গভর্নিং বডির সদস্যদের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী বুলিং-র্যাগিংয়ের মাত্রা অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করতে হবে। ছাত্রীদের কাউন্সিলিং করার বিষয়টিও রয়েছে। বুলিং ও র্যাগিংয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং কমিটি, অ্যাডহক কমিটি, বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানের কোনো সভাপতি-সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিধি, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফৌজদারী আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২০১৮ সালের দিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে অপমান করে বের করে দেয়ার পর নিজ বাসায় আত্মহত্যা করে অরিত্রি। এরপরে বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে একটি সুয়োমোটো রুল ইস্যু করা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র্যাগিং প্রতিরোধে নীতিমালা বা গাইড লাইন তৈরি করার জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
নির্দেশ অনুযায়ী এই কমিটি একটি নীতিমালা খসড়া করে ২০১৯ সালে আদালতে দাখিল করে। এরপর নীতিমালা কয়েক দফা সংশোধন, পরিমার্জন, সংযোজন-বিয়োজন করা হয়।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, তিন মাসের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নীতিমালা পাঠাতে শিক্ষাসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে কমিটি গঠনসহ নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, নীতিমালায় বুলিং ও র্যাগিংয়ের জন্য ফৌজদারি শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে শাস্তি কী হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট করে শাস্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত।