পিরোজপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন হবে সাঈদীর
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন। সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমইউ) তিনি মারা যান। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ তার নিজ জেলা পিরোজপুরে দাফন করা হবে। সাঈদী ফাউন্ডেশনের মসজিদের পাশে তাকে কবর দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পুলিশ কঠোর অবস্থান নেয়। এ সময় কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো হাসপাতাল এলাকা। এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। নেতা–কর্মীরা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ উল্লেখ করে বিক্ষোভ করেন।
পরে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স পুলিশের কড়া পাহারার মধ্যে শাহবাগ এলাকা ছাড়ে। তাঁর মরদেহ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে সাঈদীর লাশ দাফনকে কেন্দ্র করে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পিরোজপুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় জামায়াতের দলীয় সূত্রে জানা যায়, জোহরের নামাজ শেষে জানাজা সম্পন্ন করে বড় ছেলে রাফিক বিন সাঈদীর কবরের পাশে সাঈদীকে দাফন করা হবে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালেই সাঈদী ফাউন্ডেশনের মসজিদের পাশে তার কবর খোঁড়া হয়।
আরও পড়ুন: পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেলে শাহবাগ থেকে সরলেন সাঈদীর অনুসারীরা
সাঈদীর মৃত্যুর খবরে সোমবার রাত থেকেই পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পুলিশ। উপজেলার চন্ডিপুর, বালিপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সোমবার গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জ্ঞান হারান সাঈদীর সেজ ছেলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী। তাকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ছিলেন। তিনি জামায়াতের রাজনীতির পাশাপাশি ওয়াজ করা বা ধর্মীয় বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০১০ সালের ২৯ জুন তিনি গ্রেপ্তার হন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে। পরে ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন আপিল বিভাগ।