আমেরিকায় প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়: ওবায়দুল কাদের 

  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে চিন্তিত, আমেরিকায় প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক- ছাত্র মিলনায়তনে আয়োজিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘বাংলার মাতা, বাংলাদেশের নেতা’ শীর্ষক ছাত্রী সমাবেশে এই মন্তব্য করেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট তার বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ নেই যা আদালতে পেশ করা হয়নি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ বাড়ছে তার জনমতও ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক জরিপে দেখলাম ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৪২ শতাংশ আর বাইডেনের জনপ্রিয়তাও ৪২ শতাংশ, অথচ সে নিয়মিত মানবাধিকার ক্ষুন্ন করেই যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তারা এত বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করে তাহলে কেন আমেরিকায় বছরে ২০০ এর অধিক গান ফায়ার হয়ে শত শত নারী- শিশু মারা যায়? ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে পারে না? নাইজারে সরকার প্রধানকে ধরে রাখা হয়েছে, ৭ দিন পেরিয়ে গেছে, কেন সেখানে কোন সমাধান নেই? সুদানে দুই জেনারেল প্রতিদিন হাজার মানুষ মেরে চলছে, কিন্তু কেন তারা তাদের থামাতে পারেনি? সোমালিয়ায় প্রতিদিন কত মানুষ মরছে কই আমেরিকা তো কিছু বলছে না? আমেরিকাই বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে অথচ সেখানে দেশে মানবাধিকার নিয়ে কথা হয় না। তারা শুধু বাংলাদেশের কোথায় একটু মানবাধিকার লঙ্ঘন হলো সেই চিন্তায় অস্থির।

আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'দুষ্টু ছেলে' ইজরায়েলকে তো কেউ কিছু বলে না? প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনের সাংবাদিক থেকে শুরু করে শিশু, নারীদের হত্যা করা হচ্ছে কিন্তু সেগুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না, সমাধান করছে না? কারণ তারা তাদেরর কাছের ও আজ্ঞাবহ দেশ। তারা তাদের অপরাধ দেখবে না। আজকে বিচার কোথায়? ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা সবাই ঘুরে ঘুরে শুধু আমাদের দেশেই এসে খোঁজ নিচ্ছে, অথচ অন্যান্য দেশে কত নৃশংসতা চলছে, মানুষ  খাবার পাচ্ছে না, থাকার জায়গা পাচ্ছে না। তাদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ, আসে ঘুরেফিরে শুধু বাংলাদেশে। বাংলাদেশের দোষ কোথায়?

জাতিসংঘের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের জনসংখ্যা ৪ লাখ ছিলো, এখন বাড়তে বাড়তে ১২-১৩ লাখ হয়েছে। বাংলাদেশ কিভাবে এত মানুষকে খাওয়াচ্ছে! রোহিঙ্গাদের দোষ কোথায়? জাতিসংঘ তাদের কেন নিজ দেশে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করছে না? আমাদের কক্সবাজার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এর মাঝে আমাদের অনুদান কমিয়ে দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ শুধু প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেই চুপ হয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেই কি জাতিসংঘের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? এখন তাদের ক্লাইমেট চ্যাঞ্জের চিন্তা মাথায় ঢুকেছে। একই সাথে একদিকে ঝড়, বৃষ্টি অন্যদিকে খরা, দুর্ভিক্ষ চলছে। এখন তারা উদ্যোগ নিচ্ছে প্রচার করছে পৃথিবী রক্ষা করতে হবে। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি মিথ্যাকে সত্য বলে বয়ান করেন, এমন ভাব দেখান যে আপনার মত আস্থাভাজন কেউ হয় না। আপনাকে এর আগেও আমি অনেক প্রশ্ন করেছি আপনি জবাব দেননি। বঙ্গমাতার জন্মদিনে আমি জানতে চাই, আপনার নেত্রীর জন্মদিন ৬টি কেন? একজন মানুষের কয়টা জন্মদিন হয়? বাংলাদেশের একটি দল কত নিষ্ঠুর, এরা রাজনীতিতে কতটা প্রতিশোধ পরায়ন, সেটা সবাই জানে। অথচ এখন তারা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে। বিদেশে গিয়ে দেশের নামে আপনারা অপপ্রচার করে যাচ্ছে,   আমাদের ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। অথচ বিদেশের কোন প্রভু বা বন্ধু আমাদের ক্ষমতায় বসাবে না, আমাদের পুনরায় ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ।

তারেক রহমানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্যদিকে যুবরাজ তারেক রহমান লিখিত মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে চলে গেছেন যে তিনি বলেছেন যে তিনি আর রাজনীতি করবেন না। অথচ তিনি লন্ডনে বসে বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছেন, দেশের অপপ্রচার করেই যাচ্ছেন, নিজের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আদালত বলেছে তারেক রহমান শাস্তি যোগ্য অপরাধী, তার কোন বক্তব্য প্রচার করা যাবে না, অথচ সে প্রতিনিয়ত আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় ছাত্রী সমাবেশে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সেক্রেটারি তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।


সর্বশেষ সংবাদ