০৪ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৪

জুমার দিন মুহাম্মাদ (সা.)- এর প্রতি দরূদ পাঠ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

  © সংগৃহীত

সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমার দিন। এদিন মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। অধিক মর্যাদাসম্পন্ন এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। ‘আল জুমা’ নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। জুমার দিনে মুমিনদের জন্য বিশেষ কিছু আমলের কথা বলা আছে হাদিসে। এর মধ্যে একটি আমল হচ্ছে দরূদ পাঠ।

দরূদ পড়া ইবাদত। জুমার দিন দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। তাছাড়া দরূদ পড়া মহান আল্লাহর নির্দেশ। আল্লাহ ও ফেরেশতারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পেশ করেন। তাইতো কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ঈমানদারদের নবির প্রতি দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-

পবিত্র কোরআনের সুরা আহজাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবির প্রতি সালাত (দরূদ) পেশ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি সালাত (দরূদ) পেশ করো এবং তাঁকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’

হাদিসে কুদসিতে মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরূদ পড়ো। কারণ, জিব্রাইল (আ.) এইমাত্র আল্লাহ তায়ালার বাণী নিয়ে হাজির হলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরূদ পড়ে, আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার ইস্তেগফার করে।’ (তারগিব: ৩/২৯৯)

জুমার দিনের এই বিশেষ আমল সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (স.) আরো ইরশাদ করেন—

‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসর নামাজের পর ওই স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার নিম্নে উল্লেখিত দরূদ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে’ (আফদালুস সালাওয়াত: ২৬)। দরুদটি হলো—

اللهم صل على محمد النبي الأمي وعلى آله وسلم تسليمًا

‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়াসাল্লিম তাসলীমা’

হজরত আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হচ্ছে জুমুআর দিন। সুতরাং ঐ দিন তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়। কেননা তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আমার কবরকে উৎসব কেন্দ্রে পরিণত করো না (যেমন কবর পূজারীরা ওরস ইত্যাদির মেলা লাগিয়ে করে থাকে)। তোমরা আমার প্রতি দরূদ পেশ কর। কারণ, তোমরা যেখানেই থাক, তোমাদের পাঠ করা দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়।’ (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

জুমার দিন বিশেষ ৩টি আমলের মধ্যে দরূদ একটি। বিশেষ করে জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিবের নামাজের অপেক্ষার সময়টিতে দরূদ পড়ার ফজিলত অনেক বেশি। এছাড়াও এ দিন সুরা কাহফ পড়া এবং আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত যে কোনো ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করাও বিশেষ আমল।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সপ্তাহের সেরা দিন জুমায় দরূদের সেরা আমল করার প্রতি মনোযোগী হওয়া। কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনায় আমল করা। রহমত বরকত ও ক্ষমার দিকে ধাবিত হওয়া।