কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের ৪ ঘণ্টা পর জামিন পেলেন সেই অধ্যক্ষ
চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের মামলায় শেরপুরের জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা (৫২) ও তার তিন সহযোগীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের চার ঘণ্টা পরই আরেক আদালতে মিলেছে তাদের জামিন।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে সদর জি আর আমলি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারিন ফারজানা উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে এর চার ঘণ্টা পর বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের সবার জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা, একই কলেজের প্রভাষক আলফাজ উদ্দিন, আত্মীয় মো. শেখ জামাল ও মো. হযরত আলী।
মামলার বাদী, আইনজীবী ও আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা ও তার তিন সহযোগী শেরপুর সদর আমলী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এসময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারিন ফারজানা উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর পরপরই তাদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে আসামিদের পক্ষ থেকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম হুমায়ুন কবীরের কাছে পুনঃজামিনের বিশেষ আবেদন করা হলে তিনি নকলা আমলী আদালতের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল মাহমুদের আদালতে তা শুনানির জন্য পাঠান। সেখানে বিকেল ৪টায় শুনানি নিয়ে তিনি অধ্যক্ষসহ চার আসামিকেই পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের আগ পর্যন্ত জামিনে মুক্তির আদেশ দেন। আর ওই আদেশের পর জেলা কারাগারে পাঠানোর আগেই আদালতের হাজত থেকেই মুক্ত হয়ে বেরিয়ে যান আসামিরা।
জানা গেছে, সদর উপজেলার লছমনপুর ঘিনাপাড়া গ্রামের মো. নুর ইসলামের ছেলে মো. মোতালেব মিয়াকে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা, প্রভাষক আলফাজ উদ্দিন ও আত্মীয়ের সহযোগিতায় ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। তিন মাসের মধ্যে চাকরির ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও চাকরি না হওয়ায় মোতালেব মিয়া চলতি বছরের ২৬ মে অধ্যক্ষের কাছে টাকা ফেরত চান। তবে অধ্যক্ষ সহযোগীদের প্ররোচনায় তা দিতে অস্বীকার করেন। ওই ঘটনায় ৭ জুন মোতালেব মিয়া বাদী হয়ে অধ্যক্ষসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর আসামিরা ১৩ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন নেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিরা আমলি আদালতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জামিননামা দাখিল ও আত্মসমর্পণ করেনি। পরে আদালত বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিকেলেই আবার জামিন মঞ্জুর হয়।