১৮ বছরে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে: পলক
আগামী ১৮ বছরে আমাদের একটি জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটিডি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সম্প্রতি গ্রামীণফোনের অফিসে জিপি অ্যাকাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত এক মাস্টারক্লাসে অতিথি বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেধাবী তরুণদের দক্ষতার পূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণফোনের জিপি অ্যাকাডেমি প্ল্যাটফর্ম। এরই ধারাবাহিকতায় ওই মাস্টারক্লাসের আয়োজন করা হয়।
প্রাক-নিবন্ধনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৩শ’রও বেশি তরুণ শিক্ষার্থী জিপি অ্যাকাডেমির এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। মাস্টারক্লাসে প্রতিমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের মূল চারটি ভিত্তি–স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি–নিয়ে আলোচনা করেন। যথাযথ ভবিষ্যৎমুখী দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কীভাবে নিজেদের ডিজিটাল রূপান্তরের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া ও প্রস্তুত করে গড়ে তোলা যায়–সে বিষয়ে তরুণদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
নিজ বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক উল্লেখ করেন, ১৮ বছর আগেও দেশে পর্যাপ্ত দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা ছিল না, আর দামও ছিল সাধারণের নাগালের বাইরে। কিন্তু সরকারের যথার্থ প্রয়াস এবং গ্রামীণফোনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা, যার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন দেশের ১২.৭ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
সরকারের ‘ট্রিপল এ’ কৌশলের উল্লেখ করে মাপ্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ইন্টারনেট ও ডিজিটাল সেবাকে আরো বেশি সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করে তোলা এবং ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরো বেশি জনসচেতনতা সৃষ্টি করা আমাদের লক্ষ্য। আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বিশ্ব এক আমূল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে, যার মাধ্যমে শ্রম-নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো ধীরে ধীরে প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনীতি গঠনের দিকে ঝুঁকবে। এ পরিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য দেশে উদ্ভাবনভিত্তিক একটি ইকোসিস্টেম গঠন করা, যেখানে নতুন উদ্যোক্তা ও উদ্যোগসমূহ বেড়ে ওঠার প্রেরণা পাবে। ইতোমধ্যে, কেবল গত ছয় বছরেই যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুর ও ভারতের মতো দেশ থেকে বিনিয়োগকারীরা আমাদের বাজারে ৮শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। পাশাপাশি, এই খাতে সরকারেরও ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। কেননা, আগামী ১৮ বছরে আমাদের একটি জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতির পথ গড়ে তুলতে হবে, যেমনটি আমরা অতীতে সিলিকন ভ্যালিতে গড়ে উঠতে দেখেছি।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘আমি মনে করি, আমারও অনেক কিছু শেখার আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ রূপকল্পের অন্যতম প্রধান নীতিনির্ধারক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের কাছ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ ধারণা নিয়ে সরাসরি জানতে পারা আমাদের সবার জন্য এক অনন্য সুযোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের নিজেদের ওপর বিনিয়োগ করা জরুরী, যাতে আগামীতে আমরা নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে পারি। ভবিষ্যৎ উপযোগী বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উন্মোচনের এখনই সময়। শিখতে ও নিজেদের বিকাশে আমাদের মনকে উন্মুক্ত করতে হবে। কেননা, আমাদের আজকের স্বপ্নের ওপরেই নির্ভর করছে আমাদের আগামীর অর্জন।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন, কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স’র সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত, হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফারহানা ইসলাম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা হোসেন শাম্মু এবং প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমি (www.grameenphone.academy) মূলত একটি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া যায়। এটি ক্যারিয়ার, ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যবসায় উদ্যোগসহ তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়ে সেশনও আয়োজন করে থাকে।