এবার বাসেই ১৫ মিনিটে এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট
রাজধানীতে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে ২০১১ সালে শুরু হয় দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করার চিন্তাভাবনা। যুগের পরিক্রমায় রাজধানীবাসীর স্বপ্নের উড়ালসড়কের এয়ারপোর্ট-ফার্মগেট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশ আসছে সেপ্টেম্বরেই খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চালু হলে, যানজটের এ শহরে মাত্র ১৫ মিনিটেই চলে আসা যাবে এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট।
এতে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারিতে নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়া প্রকল্পটির। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালে। কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে পুরো কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ২০২৪ সালের জুনে। তিন ভাগে বিভক্ত এ উড়াল পথের গতিপত হচ্ছে- কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ের মূল লেনের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
আর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়নাধীন এ সড়কের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটেই চলে আসা যাবে যাত্রাবাড়ী। এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার জন্য পথ থাকবে ৩১টি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। দেশের প্রথম উড়ালপথের পুরো প্রকল্প শেষ হলে রাজধানীকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের (কুতুবখালী) সঙ্গে যুক্ত করবে এক্সপ্রেসওয়েটি।
প্রকল্প নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিন ধাপের মধ্যে প্রথম ধাপে রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা এলাকা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত; দ্বিতীয় ধাপে বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার লেভেলক্রসিং পর্যন্ত এবং তৃতীয় ধাপে মগবাজার লেভেলক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। অগ্রগতির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপ বিমানবন্দর-বনানী অংশের কাজ শেষ হয়েছে ৯২.১৫ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপ বনানী-মগবাজার অংশের অগ্রগতি ৪৫.৩ শতাংশ। আর শেষ ধাপ মগবাজার-কুতুবখালী অংশের কাজের অগ্রগতি ২ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম ধাপের দৈর্ঘ্য ৭.৪৫ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপের দৈর্ঘ্য ৫.৮৫ কিলোমিটার এবং তৃতীয় ধাপের দৈর্ঘ্য ৬.৪৩ কিলোমিটার।
প্রকল্প সূত্র জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের সংযোগ সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হলেই এটি যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। রাস্তার দুই পাশে রেলিং বসানোর চলছে রাস্তায় বৈদ্যুতিক বাতি বসানোর কাজও। কয়েকদিনের মধ্যে কাওলা থেকে বনানী অংশ পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে। এ প্রকল্পের জন্যে ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৪১৩ কোটি টাকা।
এদিকে শনিবার (৮ জুলাই) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পরিদর্শন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেপ্টেম্বরে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন।পুরো কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমবে। একই সঙ্গে অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, এই উড়াল সড়কে মোটরসাইকেল ও থ্রি হুইলার চলাচল করবে না। যানবাহন চলাচল নিরবচ্ছিন্ন রাখা হবে।