চামড়ার নিম্ন বাজারদর, বেকায়দায় কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা
বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার কুরবানির ঈদে চামড়া বিক্রি হয় কম মূল্যে। এতে দেশের অনেক এতিমখানা ও কওমি মাদ্রাসা কর্তৃক পরিচালিত লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোর কর্তৃপক্ষ চরম বিপাকে পড়েছে।
জানা যায়, প্রতিবছরই ঈদুল আজহায় কোরবানির পর পশু চামড়াগুলো বিভিন্ন স্থানীয় মসজিদ, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোতে দেওয়া হয়। আর এসব সংগৃহীত চামড়া বিক্রির অর্থে এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিংয়ে দ্বীনি শিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের খাবার জোগান হয়ে থাকে।
কিন্তু গত কয়েক বছরের মতো এবারের চামড়ার দাম না থাকায় ওই সব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কারণ, এবারে কোরবানিতে পাওয়া চামড়া পানির দামে বিক্রি করে যে অর্থ মিলবে, তাতে ওই সব দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের এক মাসের খাবারও জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না।
এ নিয়ে আজ শনিবার সৈয়দপুর শহরের কাজীপাড়ায় অবস্থিত আল জামিয়াতুল আবারিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ আবুল কালাম কাশেমী জানান, ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত তাঁর মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে ৮০০ আবাসিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এবারের কোরবানির ঈদে মাদ্রাসা ফান্ডে ৪৮১টি গরুর চামড়া পাওয়া গেছে। এসব বিক্রি করেছে মিলেছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯০ টাকা।
আর কয়েক শ ছাগলের চামড়া মিললেও সেসব চামড়া ব্যবসায়ীরা নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। এতে চরম বেকায়দায় পড়েছেন তিনি। সেসব ছাগলের চামড়া গত দুই দিন যাবৎ মাদ্রাসা বারান্দায় পড়ে আছে, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
আর গরুর চামড়া বিক্রির যে অর্থ মিলেছে, তা দিয়ে মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের এক-দেড় মাসেরও খাবার চালানো যাবে না। বছরের বাকি মাসগুলো মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কীভাবে খাবার দেবেন, তা নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তিনিসহ সংশ্লিষ্টরা।
মো. আজিজুল হক নামের এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, জেলার ১৫-১৬ জন চামড়া ব্যবসায়ীর ট্যানারি মালিকদের কাছে বিগত চার-পাঁচ বছরের প্রায় তিন কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ওই টাকা না পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ঋণ করে এবারও চামড়া কিনেছেন। কিন্তু চামড়ার দরপতন এবং বেশি দামে লবণ ও মজুরি দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করতে গিয়ে পুঁজি ফিরে পাব কি না সন্দেহ রয়েছে।