২৭ জুন ২০২৩, ১৪:৩৫

জুলাই থেকে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য রুপিতে

  © সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে বিশ্বে সর্বাধিক প্রচলিত মুদ্রা হচ্ছে মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মার্কিন ডলারের মাধ্যমে বাণিজ্যিক লেনদেন করে আসছিল। ব্যতিক্রমের মধ্যে যেমন চীনা মুদ্রা ইউয়ানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা শুধু ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারেন। তবে ভারত তাদের নিজস্ব মুদ্রা রুপিতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করে আসছে। এবার সেই তালিকায় বাংলাদেশ যোগ হল। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশেরে সঙ্গে রুপিতে লেনদেন করবে ভারত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী অর্থবছর জুলাই থেকে ভারতের সঙ্গে রুপিতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু হতে পারে। ১১ জুলাইয়ে রুপির মাধ্যমে লেনদেন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উদ্বোধন হতে পারে। আপাতত দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য হবে শুধু ভারতীয় মুদ্রা রুপিতে। তবে মার্কিন ডলারে বাণিজ্য হওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত থাকছে আগের মতোই।

জানা যায়, প্রায় দশ বছর ধরে ভারতের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য করার আলাপ চলছে। ডলার বা অন্যকোনো মুদ্রা এড়িয়ে দুটি দেশ যখন নিজেদের মধ্যে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য পরিচালনা করে, আর্থিক পরিভাষায় একে বলা হয় ‘কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থা’। এ ব্যবস্থায় অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ণ ব্যাংককে ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) এবং আইসিআইসিআই ব্যাংকে সম্প্রতি হিসাব খোলার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ হিসাবের নাম নস্ট্র হিসাব।

আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়তি প্রণোদনা বাজারে কী প্রভাব ফেলবে?

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) ইতিমধ্যে ইস্টার্ণ ব্যাংককে নস্ট্র হিসাব খোলার অনুমতি দিয়েছে। একই হিসাব খুলতে সোনালী ব্যাংক আরবিআইয়ের অনুমতি পেতে পারে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে।

এর আগে কোভিড ও পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও ডলার-সংকট দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এ অবস্থায় ভারতের দিল্লিতে গত বছরের ডিসেম্বরে যখন দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়, তখনই ভারতের পক্ষ থেকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের মাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা ও ভারতীয় মুদ্রা রুপি ব্যবহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এরপর ভারতের বেঙ্গালুরুতে গত ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরদের সম্মেলনের এক ফাঁকে দুই দেশের গভর্নরদের একটি বৈঠক হয়। উভয় গভর্নরই কাজটি দ্রুত করার বিষয়ে একমত হন বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৮ হাজার ৯১৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের পণ্যই আমদানি হয় ভারত থেকে। একই অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করে ১৯৯ কোটি ডলারের পণ্য। আমদানি-রপ্তানি মিলিয়ে উভয় দেশের মধ্যে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয় ওই অর্থবছরে।