২৩ জুন ২০২৩, ১৮:২১

ক্ষমা চাইলেন ‘এফকে’

কৌশিক ফারদিন  © সংগৃহীত

দুই ভিএফএক্স আর্টিস্টের পাওনা ৬-৮ হাজার টাকা পরিশোধ না করে তীব্র সমালোচনার ‍মুখে পড়েছেন তরুণ ভিডিও নির্মাতা কৌশিক ফারদিন। বিষয়টি নিয়ে গেল কয়েকদিন চুপ থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি নিজের অবস্থান জানিয়ে তার পূর্বের কাজের জন্য ক্ষমা চান। তিনি দাবি করেছেন, পাওনা টাকার কথা ভুলে যাওয়ায় তিনি তা সময়মত পরিশোধ করতে পারেননি।

কৌশিক ফারদিনের চ্যানেলের নাম ‘এফকে’। তিনি ইউটিউব ও ফেসবুকে ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে বেশ জনপ্রিয়। সম্প্রতি সাব্বির আহমেদ ও মাহাদী রহমান নামে দুজন ভিএফএক্স আর্টিস্ট ফারদিনের কাছে টাকা পাবেন জানিয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। মূলত সেখান থেকে শুরু এ গল্পের।

জানা গেছে, ফারদিনের ভিডিওতে সাব্বির আহমেদ ও মাহাদী রহমান ভিএফএক্স আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন। প্রথম কাজটির পেমেন্ট পাওয়ার পর তারা দুজন ফারদিনের নতুন প্রজেক্টে যুক্ত হন। নতুন কাজটি করার পর তিন মাস কেটে গেলেও দ্বিতীয় কাজের পেমেন্ট পাননি তারা।

এই সময়ে শুধুমাত্র এ দুজনের পেমেন্ট বাকি ছিলো। বাকি এই প্রজেক্টে কাজ করা বেশিরভাগ মানুষের পেমেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর কয়েকদিন পরে আমি অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই, আর এ সময়ে এই দুজনের পাওয়া টাকার কথা আমি ভুলে যাই।

এরপর থেকে ফারদিনকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। ভিডিও নির্মাতারা তাকে নিয়ে নতুন নতুন হাস্যরাসাত্মক ভিডিও তৈরি করছেন। চারদিকের এমন সমালোচনায় অনেকটা ভেঙে পড়েছেন ফারদিন।

ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চয়ে ফারদিন বলেন, ‘‘আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন কি করবেন না, আমি জানি না। তবুও আমি হাজারবার ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত। আমার অনুসারী, সহকর্মী এবং সমগ্র দেশবাসীর কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’’

তিনি বলেন, গত কয়দিন থেকে ইন্টারনেটে যে ঘটনাটি ঘটতেছে, সেটা আমার থেকে আপনারা বেশি জানেন। এটা সত্যি যে সাব্বির আহমেদ ও মাহাদী রহমান দুজন এডিটর আমার কাছে ৬-৮ হাজার টাকা পায়। এটা সত্যি, তাদের পেমেন্টা দিতে আমার দেরি হয়েছে। কিন্তু এটার পেছনে বেশকিছু কারণ ছিলো।

‘‘যে প্রজেক্টে এ দুজন এডিটর কাজ করেছেন, সেখানে ভিএফএক্সের কাজ ছাড়াও অন্যান্য কাজে পুরো ভিডিওটি বানাতে আমার ২৫-৩০ হাজার টাকা নিজ থেকে ইনভেস্ট করতে হয়েছে। যখন ভিডিওটি পরিপূর্ণ হয় এবং কোম্পানিকে দেওয়া হয়, তখন তারা ভিডিওটি এপ্রুভ করেনি। এমন অবস্থায় আমি নিজেও কোনো টাকা পাইনি।’’

আরও পড়ুন: তিনবার গণিত অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বুয়েটে প্রথম শাফিন

ফারদিন বলেন, একজন ১৯-২০ বছর বয়সী মিডল ক্লাস ফ্যামিলি ছেলে হওয়ায় এই ইভেস্টমেন্ট আমার কাছে অনেক বড় কিছু ছিলো। ঠিক এই পরিস্থিরি মধ্যে ৬-৮ হাজার টাকা দেওয়ায় আমার কাছে অনেক বড় একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তখন আমি দুজন এডিটরকে আমার পরিস্থিতির কথা শেয়ার করি। পরে আমি তাদের প্রতিশ্রুতি দেই যে, কয়েকদিনের মধ্যেই এ টাকা পরিশোধ করে দিবো।

নিজের ব্যস্ততার কারণে দুজনের বাকি টাকার কথা ভুলে যান দাবি করে তিনি বলেন, এই সময়ে শুধুমাত্র এ দুজনের পেমেন্ট বাকি ছিলো। বাকি এই প্রজেক্টে কাজ করা বেশিরভাগ মানুষের পেমেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর কয়েকদিন পরে আমি অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই, আর এ সময়ে এই দুজনের পাওয়া টাকার কথা আমি ভুলে যাই। এই ভুলের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং লজ্জিত। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

পেমেন্ট ইস্যু নিয়ে অনেকে সুযোগ নিচ্ছে বলে অভিযোগ তার। ফারদিন বলেন, এই কয়েকদিনের পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করবো, কী করবো, কী করা উচিৎ—আমি বুঝতেছিলাম না। আমি যাদেরকে চিনি, যাদেরকে আমি কখনো দেখিও নাই, তারাও এসে আমার কাছে টাকা দাবি করতেছে! তাদেরও নাকি পেমেন্ট বাকি। অন্যদিকে যাদের পেমেন্ট আগেই করে দেওয়া হয়েছে, তারাও এসে টাকা পাবে বলে দাবি করা ‍শুরু করে।