বরগুনায় ১০ ছাত্রীকে মলমূত্র খাইয়ে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
বরগুনার আমতলীতে একটি মাদ্রাসায় বিচারের নামে ১০ ছাত্রীকে মারধর এবং মলমূত্র খাইয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় তিন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রবিবার (৪ জুন) আমতলী নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভগী এক ছাত্রীর অভিভাবক।
আমতলী পৌরসভার মাদানীনগর জামিয়া সাইয়্যেদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক তাসলিমা বেগম, তার স্বামী আব্দুর রশিদ, ছেলে তাইয়েব ও মেয়ে নুসরাত এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, জামিয়া সাইয়েদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক তাসলিমা বেগমের মেয়ে নুসরাত গত শুক্রবার অভিযোগ করে, মাদ্রাসার এক ছাত্রী মোবাইলে তার ছবি তুলেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই ১০ ছাত্রীর বিচারে বাসেন তাসলিমা। একপর্যায়ে তাসলিমা, তাঁর স্বামী আব্দুর রশিদ, ছেলে তাইয়েরা ও মেয়ে নুসরাত ওই ছাত্রীদের মারধ করেন। এসময় মলমূত্র, ড্রোনের পচা পানি ও হাসের মল বালতিতে মিশিয়ে জোরপূর্বক খাইয়ে দেন তারা। এতে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। শনিবার ওই ১০ ছাত্রীকে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের ঘটনাটি জানায় তারা। এসময় তাদের মধ্যে তিন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের শনিবার উপজেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক কাঙ্ক্ষিতা মণ্ডল বলেন, সোমবার (৫ জুন) সকালে মাদ্রাসায় পড়ুয়া তিন ছাত্রীকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও অন্যতম অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুর রশিদ ১০ ছাত্রীকে ‘মলমূত্র’ খাওয়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, গত শুক্রবার রাতে মোবাইলে আমার (আব্দুর রশিদের) মেয়ে নুসরাতের ছবি তোলায় তাদের বিচার করে মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি।
যদিও নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীরা বলছে, ছবি তোলার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এবিষয়ে আমতলীর ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘নোংরা এ ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, এবিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।