এবার পর্যটন সংস্থায় সিইও দুদক থেকে বরখাস্ত শরীফ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন এবার একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদে যোগ দিয়েছেন। তিনি আগামী পয়লা জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। দুর্নীতির ক্ষেত্রে অসম সাহস দেখানো, দুর্দান্ত মেধা আর দেশপ্রেমের কারণে শরীফ উদ্দিনকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই পর্যটন সংস্থার কর্মকর্তারা।
দুদক থেকে চাকরি যাওয়ার পর ৯ মাস বেকার ছিলেন শরীফ উদ্দিন। তারপর বাধ্য হয়ে ভাইয়ের দোকানে বসেন তিনি। সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ‘ফ্লাই টেক্সি অ্যাভিয়েশন লিমিটেড’ নামে বিমান সংস্থার কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেন শরীফ উদ্দিনের কাছে। শরীফ উদ্দিন চাকরি করার সম্মতি দেওয়ার পর সম্প্রতি নিয়োগপত্র পাঠায় সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আরকে রিপন। ওই নিয়োগপত্রে আগামী পয়লা জুলাই থেকে যোগদানের কথা বলা হয়েছে।
‘ফ্লাই টেক্সি অ্যাভিয়েশন লিমিটেড’ মূলত রাশিয়া ও কোরিয়ান-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। সবে বাংলাদেশে তাঁরা কার্যক্রম শুরু করেছে। এটি মূলত ফুল প্যাকেজ ট্যুরিস্টনির্ভর প্রতিষ্ঠান। ট্যুরিস্টনির্ভর এখানে সব ধরনের সেবা দেওয়া হয়। তাদের প্রধান লক্ষ্য দেশের ৬৪ জেলায় প্রতি ঘণ্টায় হেলিকপ্টার সার্ভিস দেওয়া। তাদের প্রধান কার্যালয় ঢাকার মিরপুর ১১ অ্যাভিনিউতে।
ফ্লাই টেক্সি অ্যাভিয়েশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আরকে রিপন জানিয়েছেন, পত্রিকায় খবরটি পড়ার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই শরীফকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে নেওয়ার। তারপর নিয়োগপত্র পাঠাই। শরীফ সাহেব সম্প্রতি সম্মতি দিয়েছেন। আগামী পয়লা জুলাই থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন।
রিপন বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে শরীফ সাহেব অত্যন্ত মেধাবী, কর্মঠ। তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম লুকিয়ে আছে। আমরা সেটিকে কাজে লাগাতে চাই। আশা করি শরীফের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠান এগিয়ে যাবে।
এ নিয়ে শরীফ বলেন, আমার চাকরি হারানোর গল্প সবাই জানার পর আশা করেছিলাম, চাকরিটা ফিরে পাব। যাই হোক, পর্যটন সংস্থার এই কোম্পানিটি আমাকে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি এই জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রসঙ্গত, উপসহকারী পরিচালক হিসেবে শরীফ উদ্দিন প্রায় সাড়ে তিন বছর দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সে সময় এনআইডি সার্ভার ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি ভোটার করার অভিযোগে ২০২১ সালের জুনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) একজন পরিচালক, ৬ কর্মীসহ আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেন। এ মামলার পরপর ওই বছরের ১৬ জুন তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। এর আট মাসের মাথায় চাকরি থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়। তারপর বাধ্য হয়ে চট্টগ্রামের ষোলোশহরে ভাইয়ের একটি কনফেকশনারি দোকানে বসেন শরীফ। এরপর ৩৫টি কোম্পানি থেকে চাকরির প্রস্তাব পান শরীফ।