০৯ মে ২০২৩, ১৩:৩৫

সাইফুদ্দিন মিলনের বেল্টের দাম ৩ কোটি টাকা!

সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন  © সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলনের গুচি ব্রান্ডের একটি বেল্ট নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে হইচই শুরু হয়েছে। ১৯৮৯ সালে মাত্র ৯ হাজার টাকা দামে তিনি ওই বেল্ট দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কিনেছিলেন। কিন্তু মিলনের ৯ হাজার টাকায় কেনা এ বেল্টির দাম মানুষজন তিন কোটি টাকা উল্লেখ করে ট্রল করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। যা কোনোভাবে ঠিক নয় বলে দাবি তার।

ঘটনার সূত্রপাত গেল কয়েকদিন আগে থেকে। মিলন নিজের ফেসবুকে গুচি ব্রান্ডের ওই বেল্টি পরা দুইটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। দুটি ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার এই গুচি ব্র্যান্ডের বেল্ট ১৯৮৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে নয় হাজার টাকায় খরিদ করেছিলাম। এখনো বেল্টটি আগের মতোই চকচকে। প্রায় ৩৪ বছর আগে আমি এই টাকায় কামরাঙ্গীরচরে ৬ কাঠা জমি কিনতে পারতাম। যার মূল্য তিন কোটি টাকা।’’

মিলনের দাবি, মানুষ না বুঝে তার বেল্টের দাম নিয়ে ট্রল করছে। তিনি যেটা বোঝাতে চেয়েছেন মানুষ সেটা না বুঝে নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা করছেন। পরে অবশ্য বিষয়টি পরিষ্কার করতে ‍পৃথক একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেখানে তার নিজের বক্তব্য এবং মানুষের ট্রলের বিবরণ তুলে ধরেছেন।

ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, কয়েকদিন আগে আমি একটি পোস্ট করেছি। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১৯৮৯ সালে কেনা আমার একটি বেল্টের দুটি ছবি শেয়ার করেছি। এটা প্রায় ৩৪ বছর আগে ৯ হাজার টাকায় কিনেছি। ওই সময় কামরাঙ্গীরচরে যদি এই টাকায় জমি কিনতাম তাহলে ছয় কাঠা জমি পাওয়া যেত। যেটার বর্তমান মূল ৩ কোটি টাকা। 

‘‘আমি কিন্তু বেল্টের দাম তিন কোটি টাকা বলিনি। আমি বলেছি, ওই সময়ে যে বেল্টটি আমি শখের বশে ৯ হাজার টাকায় কিনেছিলাম সেটি না কিনে যদি জমি কিনতাম—তাহলে সেটার দাম ৩ কোটি টাকা হতো। আমার বক্তব্য কিন্তু ৩ কোটি টাকা নয়।’’

আরও পড়ুন: বেকার সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেই: জিএম কাদের

ক্ষোভ প্রকাশ করে মিলন ভিডিও বার্তায় বলেন, এ দেশের এমন বহু মানুষ আছে যাদের কোনো কাজকর্ম নাই, যারা সমাজের কোনো গুরুত্বপূর্ণ মানুষও না, কিন্তু মানুষকে নিয়ে ট্রল করতে খুব বেশি পছন্দ করেন। তার ব্যক্তিগত কি যোগ্যতা সেটা একবারও চিন্তা করে না।

তিনি বলেন, একটা জিনিস আপনারা দেখেন, আমি কোনো সেলেব্রেটি না। আমি যদি কোনো সেলেব্রেটি হতাম, এটা যদি বিল গেটসের হতো বা বক্সার মোহাম্মদ আলীর হতো বা নেলসন মেন্ডেলার হতো—সেটা যত ক্ষুদ্র জিনিসই হোক না কেন পৃথিবীর বড় বড় সেলেব্রেটির এরকম জিনিস অনেক বেশি দামে নিলামে বিক্রি হয়।

‘‘আমি সাধারণ মানুষ, স্বাভাবিকভাবে ওই নয় হাজার টাকার বেল্ট এখন ৯ টাকাও বিক্রি হবে না। আমার বক্তব্যটা ছিলো এরকম। যেহেতু এটি একটি ব্রান্ডের বেল্ট স্বাভাবিকভাবে ৯ হাজার টাকা দিয়ে যে বেল্ট কিনেছি, সে বেল্টটি এখন খুব বড়জোর ৪০-৫০ অথবা ১ লাখ টাকা দাম হতে পারে। কিন্তু আমার বক্তব্যটি না বুঝেই বেল্টেটির দাম তিন কোটি টাকা বানিয়ে ফেলা হয়েছে।’’

মিলন প্রায় আলোচনায় আসেন, হন গণমাধ্যমের শিরোনাম। এরমধ্যে বেশিরভাগ সময় পোস্টা নিয়েই তিনি আলোচনায় থাকেন। ঢাকা শহরের যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই দেখা যায় হাজী মিলনের পোস্টার। জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে শুরু করে নানান উপলক্ষে ছাপানো পোস্টারে দেখা যায় তার হাস্যোজ্জ্বল মুখ। সর্বশেষ মেট্রোরেলের পিলারে পোস্টার লাগানো নিয়ে তিনি করে আলোচনায় আসেন।

তিনি পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হয়ে হেরেছেন দুই বার। আগে পোস্টার নিয়ে আলোচনায় আসলেও এবার ভিন্ন একটি আলোচনায় এসেছেন তিনি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে মিলন ওই ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, আমাদের বয়স যখন ১৬-১৭ বছর, তখনই আমরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। প্রথম বিভাগের ফুটবল খেলেছি। সমাজে একজন লেখক ছিলাম। পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছি। অনেক বড় রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলাম, এখনো আছি। আমার সম্পর্কে না জেনেই অনেকে মানুষ ট্রল করেন। এতে আমার কিছু আসে যায় না। আপনারা নিজেরাই ট্রল হয়ে যাচ্ছেন।