ফেসবুকে অপছন্দের কাউকে এড়িয়ে চলবেন যেভাবে
ফেসবুক ব্যবহার করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া এখন কঠিনই। ফেসবুকে অনেকেই নিয়মিত ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি প্রকাশ (পোস্ট) করেন। বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে ইন্টারনেট। আর তাই আমাদের দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহারের একটি বড় অংশজুড়েই রয়েছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আপনি পছন্দ করেন না কিন্তু তাদের ফেসবুক বন্ধু তালিকা থেকে বাদও দিতে পারছেন না।
ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় যাঁরা আছেন, তাঁদের সবাইকে কি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন? একেবারেই অপরিচিত কেউ আছে কি না, সেটা যাচাই করা প্রয়োজন। এমন কিছু মানুষ আমাদের প্রত্যেকের বন্ধু তালিকায় রয়েছে। আপনি চান না তারা আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্কে কিছু জানুক। কিন্তু বুঝতে পারছেন না সেটি কিভাবে সম্ভব। হঁ্যা সম্ভব।
কিছু কৌশল মেনে চললে ফেসবুকে গোপনীয়তা রক্ষা করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ওই পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে..
পোস্টের প্রাইভেসি নির্ধারণ
ফেসবুকে পাবলিক, ফ্রেন্ডস, ফ্রেন্ডস এক্সেপ্ট, ওনলি মি ও কাস্টম নামে ৫ ধরনের প্রাইভেসি অপশন রয়েছে। ‘পাবলিক’ প্রাইভেসিতে বন্ধু তালিকার বাইরের মানুষজনও পোস্টটি দেখতে পারেন, ‘ফ্রেন্ডস’ প্রাইভেসিতে শুধু বন্ধু তালিকার লোকজন পোস্ট দেখতে পারেন। ‘ফ্রেন্ডস এক্সেপ্ট’ প্রাইভেসিতে বন্ধু তালিকায় থাকলেও তারা পোস্ট দেখতে পারবেন না। ‘ওনলি মি’ প্রাইভেসিতে শুধু পোস্ট প্রদানকারী এবং ‘কাস্টম’ অপশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু লোককে উদ্দেশ করে পোস্ট দেওয়া যায়। শুধু আলাদা পোস্ট নয়, প্রোফাইলে থাকা যেকোনো তথ্য যেমন ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন নম্বর, ঠিকানা, পড়াশোনা বা পেশা সংক্রান্ত তথ্য, জন্ম তারিখ ইত্যাদি বিষয়েও বিভিন্ন প্রাইভেসি বাছাই করে দেওয়া যায়।
প্রোফাইল সার্চ লিমিট
ব্যক্তিজীবন বা কর্মজীবনে আমরা এমন অনেককেই চিনি, যাদের কাছে আমাদের ফেসবুক প্রোফাইল সম্পর্কে কোনো তথ্য শেয়ার করতে চাই না। এমনকি আমাদের যে ফেসবুক প্রোফাইল আছে, সে বিষয়টিও তাদের জানতে দিতে চাই না। কিন্তু সৌজন্যের খাতিরে তাদের মুখের উপর কিছু বলাও যায় না। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় হচ্ছে, আগে থেকেই প্রোফাইলের ‘সার্চ লিমিট’ ঠিক করে নেওয়া। কেননা ফোন নম্বর থাকলেই সাধারণত ‘পিপল ইউ মে নো’ তালিকায় ফেসবুক প্রোফাইল চলে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। প্রোফাইলের নাম অনুসন্ধান সীমাবদ্ধ করার জন্য সেটিংসে গিয়ে ‘অডিয়েন্স অ্যান্ড ভিজিবিলিটি’ অপশনে নিজের সুবিধা মতো পরিবর্তন করে নিতে হবে।
অনলাইন অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ই–মেইল
কোন অনলাইন অ্যাকাউন্টের সঙ্গে কোন ই–মেইল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি নিশ্চিতভাবে জানা প্রয়োজন। সেই অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে কি না কিংবা টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু আছে কি না, তা নিয়মিত যাচাই করা প্রয়োজন। অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য যে ই–মেইল ব্যবহার করা হয়েছে, মূল অ্যাকাউন্টের মতো সেটিরও নিরাপত্তা জরুরি।
ম্যাসেজিং প্রাইভেসি নির্ধারণ
অযাচিত বার্তা পেতে কেউই চায় না। এজন্য ম্যাসেজিং প্রাইভেসি সীমাবদ্ধ করা খুবই দরকারি। কাউকে ব্লক না করেও তার বার্তাটি ম্যাসেজ রিকোয়েস্টে রেখে দেওয়ার মাধ্যমে এড়িয়ে যাওয়া যায়। এছাড়া ম্যাসেজ আর্কাইভ করে দেওয়াও সাময়িক কার্যকর একটি কৌশল। বিভিন্ন আকর্ষণীয় উপহার বা প্রতিযোগিতায় বিজয়ের সুযোগ এসেছে, এমন প্রলোভন দেখিয়ে মেসেঞ্জারে তথ্য নেওয়া হয়। ফলে সাবধান।
আনফ্রেন্ড করা
বন্ধু তালিকায় অনেকেই থাকেন, যাদের সেখানে থাকাটা একসময় আর আরামদায়ক মনে হয় না। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে তাদের বন্ধু তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া। আনফ্রেন্ড করার মাধ্যমে নিজের ফেসবুককে সীমাবদ্ধ ও সুরক্ষিত রাখা যায়। তবে সেক্ষেত্রে পোস্ট প্রাইভেসি ‘ফ্রেন্ডস’ রাখাটাই সমীচীন।
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে আসছে নতুন ৩ ফিচার, লক করা যাবে নির্দিষ্ট চ্যাট
ব্লক বা রেস্ট্রিক্ট করা
আনফ্রেন্ডের চূড়ান্ত পর্যায় বলা যায় ফেসবুকে কাউকে ব্লক বা রেস্ট্রিক্ট করে দেওয়া। ম্যাসেজে ব্লক করলেও যে কেউ প্রোফাইলের প্রাইভেসি অনুযায়ী কমেন্ট ও রিঅ্যাকশন দিতে পারেন। তবে কাউকে ব্লক করলে সাধারণত তিনি বুঝতে পারেন। বিষয়টি এড়াতে চাইলে প্রোফাইল রেস্ট্রিক্ট করে দেওয়া যায়। এটা করলে মেসেজ পাঠালেও সেটি এসে পৌঁছায় না।
নিয়মিত চেকআপ
ফেসবুকের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের কোনগুলো কেন প্রয়োজন, তা ফেসবুকের একটি পেজ থেকে যাচাই করা ভালো। facebook.com/privacy/checkup হলো সেই পেজ। এই পেজ থেকে নিজের প্রোফাইলের নিরাপত্তার অবস্থা দেখা যায়।