৬টি চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন মানবিক শওকত
পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি হারিয়ে একের পর এক নতুন চাকরির প্রস্তাব পাচ্ছেন মানবিক পুলিশ খ্যাত সাবেক চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেন। তবে নতুন নতুন চাকরির প্রস্তাব পেলেও এসব চাকরিতে যোগ দেওয়ার করার আগ্রহ নেই তার। চাকরিচ্যুত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত অন্তত ছয়টি চাকরির অফার পেয়েছেন বলে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শওকত হোসেন নিজেই জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে শওকত জানান, এ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসসহ ছয়টি চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি।
শওকত বলেন, আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত ছয়টি চাকরির অফার পেয়েছি। আমাকে ফুডপান্ডা থেকে কল করা হয়েছিল। তারা আমাকে খুবই ভালো একটি পদে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া একটি কর্পোরেট অফিস থেকে মার্কেটিং এডভাইজার পদে চাকরির অফার দেয়া হয়েছিল। তারা আমাকে ৩৫ হাজার টাকা বেতনসহ আনুষাঙ্গিক অনেক সুযোগ-সুবিধা দিবে জানিয়েছে।
তবে সবকয়টি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন উল্লেখ করে শওকত বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আমি এতগুলো অফার পেয়েছি, এগুলো আল্লাহর নেয়ামত। আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ আপনারা আমাকে চাকরির অফার দিয়েছেন। ভালোবাসার জায়গাটা সবসময় থাকবে। কিন্তু যেখানে আমি আমার ভাইয়ের ব্যবসা এবং তার অফিসে জয়েন করছি না সেখানে ওনাদের কাছে আমার যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন: চাকরিচ্যুত হলেন মানবিক পুলিশ খ্যাত শওকত হোসেন।
তিনি বলেন, চাকরির অফার গ্রহণ করলে আমাকে ঢাকা যেতে হবে। ঢাকা চাকরি করতে হবে, সেখানে আমার থাকা সম্ভব না।
উল্লেখ্য শওকত হোসেনের বাড়ি নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায়। তিনি ২০০৫ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ২০০৯ সালে ঢাকা থেকে বদলি হয়ে রাঙামাটিতে যান। সেখান থেকে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে। চাকরির পাশাপাশি তিনি তিন বছরের ডিপ্লোমা এবং দুই বছরের প্যারামেডিকেল কোর্স সম্পন্ন করেন।
২০১১ সাল থেকে তিনি চট্টগ্রাম মহানগরীর অসহায়, দুস্থ ও বেওয়ারিশ মানুষদের নিভৃতে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেন। হাসপাতালের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পর তিনি মহানগরীতে ঘুরে ঘুরে স্বজনহারা, নাম-পরিচয়হীন অসুস্থ মানুষদের সেবা দিতেন, ওষুধপথ্য জোগাড় করে দিতেন। তার এই কাজগুলো ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
তবে ২০২১ সালে একটি মাহফিলে অতিথি হয়ে যান এবং ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্যের জেরে পরবর্তী সময়ে তাকে দামপাড়া বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে বদলি করে কর্ণফুলী থানায় পাঠানো হয়। সর্বশেষ তাকে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হয়।