দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শ্রমশক্তি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ মে ২০২৩, ১২:৪৫ PM , আপডেট: ০২ মে ২০২৩, ০১:০২ PM
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে বর্তমানে দেশে মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার। যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শ্রমশক্তি। এর মধ্যে পুরুষ ৪৮.২৫ শতাংশ এবং মহিলা ২৫.৪৪ শতাংশ। শ্রমশক্তিতে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের তরুণ শ্রমশক্তি হিসেবে ধরা হয়। ছয় বছরে ৬৭ লাখ ২০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৩ এর প্রথম কোয়ার্টারের (জানুয়ারি-মার্চ) প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর ফল সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন উপস্থাপনে প্রকল্প পরিচালক আজিজা রহমান বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে পরিচালিত জরিপগুলোর মধ্যে শ্রমশক্তি জরিপ একটি গুরুত্বপূর্ণ জরিপ। সর্বশেষ ২০২২ সালে এ জরিপটি পরিচালিত হয় যার প্রভিশনাল রিপোর্ট এরইমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে ২০২৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপ দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য সংগ্রহের জন্য পুরো বাংলাদেশে ১ হাজার ২৮৪টি পিএসইউ এবং প্রতিটি পিএসইউতে ২৪টি খানা দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কোয়ার্টারে ৩০ হাজার ৮১৬টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এভাবে এক বছরে তিন মাস ধরে চারটি কোয়ার্টার সম্পন্ন করা হবে।
পিডি জানান, ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ এর প্রথম ত্রৈমাসিকের ফল অনুযায়ী মোট শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী ৭৩.৬৯ মিলিয়ন (পুরুষ ৪৮.২৫ মিলিয়ন, নারী ২৫.৪৪ মিলিয়ন)। এ ছাড়াও কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী বর্তমানে ৭১.১০ মিলিয়ন (পুরুষ ৪৬.৫৪ মিলিয়ন, নারী ২৪.৫৬ মিলিয়ন)।
ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ এর প্রথম ত্রৈমাসিকের (জানুয়ারি-মার্চ) ফল অনুযায়ী, বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২.৫৯ মিলিয়ন (পুরুষ ১.৭১ মিলিয়ন, নারী ০.৮৮ মিলিয়ন)। শ্রমশক্তির বাইরে অবস্থিত জনগোষ্ঠী ৪৬.৩৯ মিলিয়ন (পুরুষ ১১.১৯ মিলিয়ন, নারী ৩৫.২০ মিলিয়ন)। এছাড়াও শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬১.৩৭ শতাংশ। অর্থনৈতিক খাত অনুযায়ী কৃষিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩১.৯৪ মিলিয়ন, শিল্পখাতে ১২.২৫ মিলিয়ন এবং সেবায় ২৬.৯১ মিলিয়ন। শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ এর প্রথম ত্রৈমাসিক যুব শ্রমশক্তি ২৭.৩৮ মিলিয়ন (পুরুষ ১৪.০৩ মিলিয়ন, নারী ১৩.৩৫ মিলিয়ন)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বিশেষভাবে অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মো. মতিউর রহমান।
দেশে গত পাঁচ বছরে বেকারের সংখ্যা কমে ২৬ লাখ ৩০ হাজারে নেমেছে, যেটি ২০১৬ সালের হিসাবে ছিল ২৭ লাখ। এসব ব্যক্তি সপ্তাহে এক ঘণ্টাও কাজ পায় না। এর মধ্যে বেকার পুরুষ ১৬ লাখ ৯০ হাজার আর বেকার নারী ৯ লাখ ৪০ হাজার। এর আগে ২০১৭ সালের জরিপে বেকার ছিল ২৭ লাখ। সুতরাং পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে বেকারত্ব পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় সপ্তাহে এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজের সুযোগ পেলে জীবনধারণ করা কঠিন। প্রতিটি শ্রমশক্তি জরিপে আন্ডার ইমপ্লয়েড বা ছদ্মবেকার নামে একটি হিসাব থাকে। তাঁরা সপ্তাহে ৩৫ ঘণ্টার কম কাজের সুযোগ পান কিংবা পছন্দমতো কাজের সুযোগ পান না। তাঁদের অনেকেই টিউশনি, বিক্রয়কর্মী কিংবা উবার-পাঠাও চালকের মতো কাজ করে জীবন ধারণ করেন। এবার শ্রমশক্তি জরিপের প্রাথমিক ফলাফলে সেই হিসাব দেওয়া হয়নি। ২০১৭ সালের জরিপে এমন ছদ্মবেকারের সংখ্যা ছিল ৬৬ লাখ।