ঈদ রোজাদারদের খুশির দিন— জেনে নিন করণীয়-বর্জনীয়

ঈদুল ফিতর মুমিন রোজাদারদের খুশির দিন
ঈদুল ফিতর মুমিন রোজাদারদের খুশির দিন  © সংগৃহীত

ঈদ আরবি শব্দ। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আল্লাহর দেয়া সেরা নেয়ামতগুলোর মধ্যে ঈদ একটি। ঈদুল ফিতর মুমিন রোজাদার বান্দার জন্য খুশির দিন। এমন দিনকে ঈদ বলা হয় যে দিন মানুষ একত্র হয় ও দিনটি বার বার ফিরে আসে। বছর ঘুরে আবার ফিরে এসেছে ঈদুল ফিতর। 

ঈদ প্রতিটি মুমিনের জন্য এক বিরাট নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ। একমাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দ উদযাপনের দিন। সুখদুঃখ ভাগাভাগি করার দিন। আনন্দের এই মহান দিনে এমন অনেক কাজ আছে, যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী হতে পারি এবং ঈদ উদযাপনের এই মহেন্দ্রক্ষণকে ইবাদতে পরিণত করতে পারি। 

ঈদুল ফিতরের দিন করণীয়
ঈদের দিন ভোর বেলা ফজর নামাজ জামাতে আদায় করার মাধ্যমে দিনটি শুরু করা উচিত। গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন ও সুগন্ধি ব্যবহার করা। ইবনে উমার (রা.) থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত, তিনি ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে গোসল করতেন। ইবনে ওমার (রা.) থেকে সহিহ সনদে আরো বর্ণিত, তিনি দুই ঈদের দিনে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করতেন। (বায়হাকি)।

* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও গোসল
ঈদের দিন গোসলের মধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা মোস্তাহাব। কেননা ঈদের দিনে সালাত আদায়ের জন্য মুসলমানরা এক জায়গায় মিলিত হন। মূলত যে কারণে জুমআর দিনে গোসল করা মোস্তাহাব সে কারণেই ঈদের দিন ঈদের নামাজের আগে গোসল করা মোস্তাহাব।

* পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর পোশাক পরা
ঈদের দিনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর পোশাক পরিধান করা সুন্নত। হজরত জাবির (রা.) হতে বর্ণিত এ সংক্রান্ত একটি হাদিস আছে। তিনি বলেন, রাসূল (সা.)-এর একটি সুন্দর জুব্বা ছিল যা তিনি দুই ঈদে ও জুময়ার দিনে পরিধান করতেন। (মুসনাদ বায়হাকী)। ইবনে উমার (রা.) থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত যে তিনি দু ঈদের দিনে সুন্দরতম পোশাক পরিধান করতেন। [ বায়হাকী : ১৯০১ ]

* তাকবির বলা
হাদিস দ্বারা প্র্র্রমাণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবির পাঠ করতেন। ঈদগাহে যাওয়ার পথে নিচু স্বরে তাকবির (আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ) পড়া সুন্নত। ঈদের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবির পাঠ করতেন। যখন সালাত শেষ হয়ে যেত, তখন আর তাকবির পাঠ করতেন না।

* সুগন্ধি ব্যবহার করা
ঈদের দিন আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত। এ দিন মুসলিমরা জামায়াতে মিলিত হন। তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, তার প্রতি আল্লাহর যে নেয়ামত তা প্রকাশ ও আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার জন্য নিজেকে সর্বোত্তম সাজে সজ্জিত করা। ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘আমি ওলামাদের কাছ থেকে শুনেছি তারা প্রত্যেক ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার ও সাজ-সজ্জাকে মোস্তাহাব বলেছেন।’ (আল-মুগনি: ইবনে কুদামাহ)

* ঈদের দিনে খাবার
ঈদুল আজহার দিন কিছু না খেয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে যাওয়া এবং নামাজের পর কোরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। তবে ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামাজ আদায়ের আগে হালকা খাবার গ্রহণ করা সুন্নত। হাদীসে বলা হয়েছে- বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে খেতেন না। সালাত থেকে ফিরে এসে কুরবানীর গোশত খেতেন। [ আহমদ : ১৪২২ ]

* ঈদের খুতবা শ্রবণ
ঈদের খুতবা বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। এতে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। হজরত আবদুল্লাহ বিন সায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের নামাজ শেষ করলেন, বললেন, আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১১৫৭

* দোয়া ও ইস্তেগফার
ঈদের দিনে আল্লাহতায়ালা অনেক বান্দাকে মাফ করে দেন। বলা হয়, ঈদের এই দিনে আল্লাহতায়ালা একদল লোককে এভাবে মাফ করে দেবেন, যেমনি তাদের মা তাদের নিষ্পাপ জন্ম দিয়েছিল। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তারা যেন এই

* পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া
ঈদের দিনে ঈদগাহে তাড়াতাড়ি যাওয়া উচিত। যাতে ইমামের নিকটবর্তী স্থানে বসা যায়। এছাড়া ভালো-কাজ তাড়াতাড়ি করার সওয়াব অর্জন করা যায়। একইসাথে সালাতের অপেক্ষায় থাকার সওয়াব পাওয়া যায়। ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া মোস্তাহাব। হাদীসে এসেছে—

হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীস- ‘সুন্নত হল ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া।’ ইমাম তিরমিযী হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন হাদিসটি হাসান। তিনি আরো বলেন, অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম এ অনুযায়ী আমল করেন। এবং তাদের মত হল পুরুষ ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাবে, এটা মোস্তাহাব। আর গ্রহণযোগ্য কোন কারণ ছাড়া যানবাহনে আরোহণ করবে না। [ তিরমিযী : ১৮৭ ]

* এক পথে যাওয়া অন্য পথে ফেরা
ঈদগাহে যে পথে যাবে সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসা সুন্নত। জাবের (রা.) বর্ণিত হাদীস- ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন।’ [ বুখারী : ৯৩৩ ] অর্থাৎ যে পথে ঈদগাহে যেতেন সে পথে ফিরে না এসে অন্য পথে আসতেন।

নবী করিম (স.) কেন এমনটা করতেন সেবিষয়ে ইসলামী চিন্তাবিদরা বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, ঈদের দিনে উভয় পথের লোকদেরকে সালাম দেয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য তিনি দু'টি পথ ব্যবহার করতেন। কেউ কেউ মনে করেন, ইসলাম ধর্মের শৌর্য-বীর্য প্রকাশ করার জন্য তিনি সকল পথে আসা-যাওয়া করতেন যেন সকল পথের অধিবাসীরা মুসলমানদের শান-শওকত প্রত্যক্ষ করতে পারে। আবার কেউ বলেছেন গাছ-পালা তরুলতা সহ মাটি যেন অধিক হারে মুসলমানদের পক্ষে সাক্ষী হতে পারে সে জন্য তিনি একাধিক পথ ব্যবহার করতেন।

* ঈদের তাকবীর আদায়
তরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদের সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। যখন সালাত শেষ হয়ে যেত তখন আর তাকবীর পাঠ করতেন না। আর কোন কোন বর্ণনায় ঈদুল আজহার ব্যাপারে একই কথা পাওয়া যায়। আরো প্রমাণিত আছে যে ইবনে উমার রা. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে ঈদগাহে আসা পর্যন্ত উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করতেন।

* গরিব ও অসহায় মানুষের সাহায্য করা
ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সকলের মধ্যে ভাগ করে নেয়া। প্রতিবেশী ও আতœীয়দের মধ্যে যারা অভাবী তাদের যথাসম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করা। আবু হুুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) অপরের কস্ট দূর করা ও অপরকে সাহায্য করার প্রতি উৎসাহিত করে বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের কস্ট দূর করে দেবে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতে তার কস্ট দূর করে দিবেন (সহীহ মুসলিম ৭০২৮)।

সম্ভাব্য পবিত্র ঈদুল ফিতর ২৪ মে

* ঈদের সালাত
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও কোরবানী কর।’ [সূরা কাউসার : ০২] অধিকাংশ ইসলামিক পণ্ডিতের মতে, এ আয়াতে সালাত বলতে ঈদের সালাতকে বুঝানো হয়েছে। রাসূল (স.) সবসময় ঈদের সালাত আদায় করতেন। তিনি কখনও ঈদের সালাত পরিত্যাগ করেননি। ইমাম আবু হানীফা (রহ.) বলেছেন, ‘ঈদের সালাত প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব। তবে ফরজ নয়।’ ঈদের সালাত যে ওয়াজিব এর আরেকটা প্রমাণ হল, যদি কোন সময় জুমআর দিনে (শুক্রবার) ঈদ হয় তখন সে দিন যারা ঈদের সালাত আদায় করেছে তারা সেদিন জুমআর সালাত আদায় না করলে গুনাহগার হবেন না।

তবে ওই এলাকার ইমামের কর্তব্য হল, তিনি ঈদের দিনে জুমআর সালাতের ব্যবস্থা করবেন। যাদের আগ্রহ আছে তারা যাতে শরিক হতে পারে। মনে রাখতে হবে ঈদের দিন জুমআর সালাত পরিত্যাগ করার অনুমতি আছে। আর এ অনুমতির ভিত্তিতে কেউ জুমআর সালাত ত্যাগ করলে তার অবশ্যই জোহরের সালাত আদায় করতে হবে। তবে উত্তম আমল হবে জুমআর দিনে ঈদ হলে জুমআ ও ঈদের সালাত উভয়টাই আদায় করা।

* ঈদে শুভেচ্ছা বিনিময়
একে অপরকে শুভেচ্ছা এবং অভিবাদন জানানোয় পরস্পরের মাঝে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায়। ঈদ উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরীয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। বিভিন্ন বাক্য দ্বারা এ শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। হাফেজ ইবনে হাজার (রহ) বলেছেন, ‘জোবায়ের ইবনে নফীর থেকে সঠিক সূত্রে বর্ণিত যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন: ‘আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনার ভাল কাজগুলো কবুল করুন।’ [আল মুজামুল কাবির লিত তাবারি : ১৭৫৮৯]। ঈদ মুবারক বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। প্রতি বছরই আপনারা ভাল থাকুন: وَكُلُّ عَامٍ وَأَنْتُمْ بِخَيْرٍ বলা যায়।

‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার ও আপনার সৎ-কর্ম সমূহ কবুল করুন। সারা বছরই আপনারা সুখে থাকুন। আপনাকে বরকতময় ঈদের শুভেচ্ছা।’

* আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ খবর নেয়া
ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ খবর নেয়া উত্তম। আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সকল প্রকার মনোমালিন্য দূর করার জন্য ঈদ হল একটা বিরাট সুযোগ। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীস, রাসূল (স.) বলেছেন, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। যে আল্লাহর সাথে শিরক করে তাকে ব্যতীত সে দিন সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় কিন্তু ঐ দু ভাইকে ক্ষমা করা হয় না যাদের মাঝে হিংসা ও দ্বন্দ্ব রয়েছে। তখন (ফেরেশতাদেরকে) বলা হয় এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়! এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়! এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়।’ (তাহলে তাদেরও যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়)। [ মুসলিম : ৪৬৫২ ]

ঈদে যা বর্জনীয়
ঈদ একটি ইবাদত। আনন্দ ও ফুর্তি করার মাধ্যমেও যে ইবাদাত পালন করা যায়, ঈদ তার অন্যতম উদাহরণ। শরিয়ত মতে আনন্দ প্রকাশের বিষয়ে কোরআনে এসেছে এভাবে, ‘বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত, সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়। এটি যা তারা জমা করে তা থেকে উত্তম।’ -সুরা ইউনুস : ৫৮ 

আমরা ঈদ পালনে অনেকে ইসলাম সমর্থন করে না এমন সব সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত হচ্ছি। যা আমাদের বর্জন করা দরকার।

ঈদের দিন রোজা পালন করা
ঈদের দিন রোজা পালন করলে ঈদের দিনের কাজসমূহ যথাযথ পালন করা যাবে না। সেজন্য হাদিসে ঈদের দিন রোজা পালন করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ এসেছে। সহিহ বোখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। ’ -সহিহ মুসলিম: ২৭৩০

* নারীদের সঙ্গে অবাধে দেখা-সাক্ষাৎ না করা
য়োজনে ও পর্দার আড়ালে নারীদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করা যাবে। কিন্তু গাইরে মাহরাম তথা শরীয়ত অনুমোদিত নয় এমন নিকট আত্মীয় নারীদের সঙ্গে অবাধে দেখা সাক্ষাৎ করা যাবে না। আমরা যদি ঈদকে ইবাদত হিসাবে পালন করতে চাই তবে অবশ্যই আমাদেরকে উল্লিখিত বিষয়সমূহ মেনে চলতে হবে।

* জুয়া, মদ, জেনা ব্যভিচার ও মাদকদ্রব্য সেবন না করা
বর্তমানে মুসলিম মিল্লাতের অনেক পদস্খলন হয়েছে, চারিত্রিক অনেক অবক্ষয় ঘটেছে। জুয়া, মদ, জেনা ব্যভিচার ও মাদকদ্রব্য সেবন চলছে। আজকাল ঈদের দিনে আনন্দ ফূর্তির নামে এ ধরণের কবিরাহ গুণাহর কাজ হতে দেখা যায়। অশ্লীল গান-বাজনার জমজমাট আসর বসে। নারীদের খোলামেলা অবস্থায় রাস্তায় বের হয়ে যায়। গান-বাজনা করে। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে এমন একটা দল পাওয়া যাবে, যারা ব্যভিচার, রেশমি পোশাক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল (বৈধ) মনে করবে। (সহিহ বুখারি)।

* অশ্লীল গান-বাজনা, সিনেমা ও নাটক দেখা
ঈদ উপলে বিশেষ নাটক, সিনেমা ও বিভিন্ন গান বাজনা-যা ইসলাম অনুমোদন করে না, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আমার উম্মতের মাঝে এমন একটা দল পাওয়া যাবে যারা ব্যভিচার, রেশমি পোশাক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল (বৈধ) মনে করবে (সহিহ বুখারী:৫৫৯০)।

* বিজাতীয় আচরণ
ঈদ নামক পবিত্র একটি ইবাদতকে আকাশ সংস্কৃতি ও বিজাতীয় আচরণের মাধ্যমে মুসলিম সমাজে অপসংস্কৃতি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে মুসলমানদের অনেকেই। হাদিসে এসেছে-আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে (আবু দাউদ : ৪০৩৩)।

* নারী-পুরুষ একে অপরের বেশ ধারণ না করা
পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষ নারীর বেশ ধারণ ও নারী পুরুষের বেশ ধারণ হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। রাসূল (সা.) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী ও নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষকে অভিশপ্ত করেছেন। (আবু দাউদ)।


সর্বশেষ সংবাদ