'গরিবের ডাক্তার' ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত সোয়া এগারোটায় ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন গরিবের চিকিৎসক। সবসময় তিনি গরীব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভাবতেন।
বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান স্বাক্ষরিত এক শোক বার্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কেবল একজন চিকিৎসাবান্ধব মানুষই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক নির্ভীক ও প্রকৃত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ একজন খাটি দেশপ্রেমিক মানুষ। তিনি দেশের গরিব মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। মুক্তিযুদ্ধকালে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়ন ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চিকিৎসাক্ষেত্রে দরিদ্র মানুষের সেবাদানে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন ডা. জাফরুল্লাহ। জাতির প্রতি তার এই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে একুশ শতকের করোনা ভাইরাস মহামারি এই -পুরো পাঁচ দশকেই কোনো না কোনো ভাবে আলোচনায় এসেছেন বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেতা, মুক্তিযোদ্ধা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বাংলাদেশে অনেকেই যাকে সম্বোধন করেন গরিবের ডাক্তার হিসেবে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্কুল জীবনের সহপাঠী ও পরবর্তীকালে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, চিন্তায় সৎ থেকে দেশের জন্য যেটা ভালো মনে হতো সেটাই সবসময় করে গেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী থাকার সময়ে কলেজের দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়ে আলোচনায় এসে পরে কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: কাল শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা
৮২ বছর বয়সী জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহু বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এর মধ্যে সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
১৯৮২ সালে চালু হওয়া ‘জাতীয় ওষুধনীতি’ প্রণয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই ওষুধনীতি নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে। তার ওষুধনীতি বাংলাদেশের ওষুধ খাতে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং এ জন্যই আজকের বাংলাদেশে ওষুধ খাতের এত উদ্যোক্তা বলে মনে করেন অনেকে।