প্রথম আলো দেশের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করেছে: ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, একটি বিশেষ পটভূমি তৈরির উদ্দেশ্য এবং দেশের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে প্রথম আলো স্বাধীনতা দিবসে আলোচিত সেই সংবাদ ও আলোকচিত্রটি প্রচার করেছিল। বিভিন্ন ধরনের উস্কানি ও সাম্প্রদায়িক মদদ প্রদানের জন্যই এটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বাধীনতা-সচেতন নাগরিক সমাজ ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষক, সাহিত্যিক, কবি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে শাস্তি প্রদান ও পত্রিকাটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে এর নিবন্ধন বাতিল করার দাবি জানান।
উপাচার্য বলেন, সভ্য বিশ্বে যে কোন ধরনের সাংবাদিকতার জন্য কিছু মূলনীতি থাকে৷ কিন্তু যখন কেউ হলুদ সাংবাদিকতা করেন ও অপতথ্য দেন এবং বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত হানেন, তখন সেটা দেশের সার্বভৌমত্বের উপরেরই এক ধরনের আঘাত আসে।
বক্তব্যে তিনি যেসব পত্রিকা ও অপশক্তি এসবে যুক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে সোচ্চার ও সরকারকে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জোরালো বক্তব্য ও উপস্থিতি এই ধরনের অপশক্তিকে রুখতে সহায়তা করবে বলেও মনে করেন তিনি।
মানববন্ধনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর প্রচারিত সংবাদকে শুধু অপসাংবাদিকতা বা হলুদ সাংবাদিকতা বলা যাবে না। এটির মাধ্যমে আঘাত এসেছে আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদার ওপরে। স্বাধীনতা দিবসে যেভাবে একটি খবর পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে সেটা নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
এই খবরটি করা হয়েছে অত্যন্ত উদ্দেশ্যমূলকভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, যারা দেশের স্বাধীনতার মর্যাদাহানী করবে, অবিলম্বে তাদের শাস্তি প্রদানের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করা হোক।
মানববন্ধনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা বাদি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, আমি দেশকে ভালোবাসি, তাই মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবাসি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর কোনো আঘাত আসুক; তা আমি চাই না। প্রথম আলো যা করেছে সেটার জন্য প্রথম আলোকে কালো তালিকাভুক্ত করে এর নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানাই।
মানবন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।