মাদ্রাসাছাত্রদের বুদ্ধিতে বেঁচে গেল অনেক প্রাণ
জোরেশোরে হুইসেল বাজিয়ে ময়মনসিংহগামী মালবাহী ট্রেন আসছিল। শ্রীপুর বরমী আঞ্চলিক সংযোগ সড়কে গণপরিবহনও যাতায়াত করছিল রেলক্রসিং দিয়ে। হুইসেল যেন চালক ও যাত্রীদের কানে যাচ্ছে না। দায়িত্বে থাকা গেটম্যান জসিমও ঘরে ছিলেন না। এ সময় পাশেই কয়েকজন মাদ্রাসাছাত্র চিৎকার শুরু করে। এতে দুর্ঘটনায় হাত থেকে রক্ষা পায় অনেক মানুষের প্রাণ।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে দক্ষিণ পাশে ঘুন্টিঘর রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী গাড়ারন শাহু হুসানিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার ছাত্র মোহাম্মদ কাউসার মাহমুদ জানায়, একের পর এক হুইসেল দিয়ে ট্রেন আসছিল। তারা কয়েকজন মিলে মাদ্রাসার টাকা ওঠাচ্ছিল। এ সময় গেটম্যান দূরে ছিলেন। ট্রেন দ্রুত গতিতে কাছে চলে আসলেও গাড়ি চলছিল।
এমন সময় পোশাক শ্রমিকবাহী বাস প্রায় রেল লাইনে উঠিয়ে দিচ্ছিল। তারা, ‘ট্রেন আসছে, ট্রেন আসছে’ বলে চিৎকার করে বাসটি থামায়। কিছুক্ষণ পর গেটম্যান এসে তড়িঘড়ি সিগনাল নামান। ততক্ষণে ট্রেনটি পার হয়ে চলে যায়। দুর্ঘটনা ঘটলে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারত।
মোহাম্মদ আলী একাডেমির ছাত্র জিসান বিল্লাহ বলে, মাদ্রাসার ছোট ছোট ছাত্ররা ডাকাডাকি করে গাড়ি আটকাচ্ছে। এরপর আমিও চিৎকার শুরু করি। পরে পাশে আড্ডা দেওয়া গেটম্যান এসে সিগনাল নামানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে ট্রেন পার হয়ে চলে যায়।
স্থানীয় সমাজ কর্মী জুবায়ের হোসেন বলেন, এ রকম দায়িত্ব অবহেলার কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল। এখানে বাঁক থাকার কারণে দূর থেকে রেল লাইন দেখা যায় না। মাদ্রাসার ছোট্ট শিশুদের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলে যাত্রীরা।
ঘুন্টিঘর রেল গেটের দায়িত্বে থাকা গেটম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এ সময় ট্রেন আসার কথা না। হঠাৎ চলে আসছে। আমি দৌঁড়ে এসে গেট নামাই। এটি মালামাল পরিবহনের ট্রেন ছিল। এ গেটে কোনও টেলিফোনে যোগাযোগ বা মোবাইল ফোন নেই। এ সময় পাশে বসে গল্প করার তথ্য জানালে তিনি বলেন, এ যাত্রায় মাফ করে দেন।
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হারুন অর রশিদ বলেন, দায়িত্ব পালনে এ ধরনের অবহেলা দুঃখজনক। তার অবহেলা জন্য বড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।