প্রথম আলোর সেই সাংবাদিককে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
স্বাধীনতা দিবসে দ্রব্যমূল্য নিয়ে করা একটি প্রতিবেদনের জেরে সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে তার বাসা থেকে সিআইডির পরিচয়ে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার ভোর চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় পুলিশ ও সিআইডির ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিআইডির পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা সাধারণ পোশাকে ছিলেন। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বাসা সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আমবাগান এলাকায়।
স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বুধবার ভোর ৪টার দিকে ৩টি গাড়িতে প্রায় ১৪–১৫ জন শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। তাদের সাত থেকে আটজন বাসায় ঢোকেন। একজন শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তাঁর ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ওই ব্যক্তিরা শামসুজ্জামানকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বটতলার নুরজাহান হোটেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তাপ্রহরী, শামসুজ্জামানসহ তাকে আটককারীরা সেহরি খান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ওই সাংবাদিকবলেন, ভোর পৌনে ৫টার দিকে শামসুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে আবার তার বাসায় যান সিআইডি পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা। দ্বিতীয়বার বাসায় যাওয়ার সময় আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু মণ্ডলকে দেখা গেছে। দ্বিতীয়বার বাসায় এসে তারা জব্দ করা মালামালের তালিকা করেন। শামসুজ্জামানকে জামাকাপড় নিতে বলেন। কক্ষের মধ্যে দাঁড় করিয়ে তার ছবি তোলা হয়। পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে আবার তারা বের হয়ে যান। বাসা তল্লাশির সময় দুবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
তুলে নেওয়ার সময় ওই বাড়ির মালিককে ডাকেন সিআইডি পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা। তারা বাড়ির মালিককে বলেন, শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নেওয়া হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, আমি আগে বিষয়টি জানতাম না। রাত দেড়টার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শামসুজ্জামানের ভাবি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সেই পরিচয় দিয়ে তারা আমাকে শামসুজ্জামানের বাসায় নিয়ে যান।
তবে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, তিনি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানেন না। তারা কাউকে গ্রেপ্তার করেননি।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানর বলেন, শামসুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে—এমন কোনো তথ্য তার কাছে নেই।