এক ফ্রেমে ২০ যমজ ভাইবোন, সবাই এক স্কুলের শিক্ষার্থী
ঠাকুরগাঁওয়ের এক স্কুলে ২০ জন যমজ ভাই-বোন পড়াশোনা করছে। একসঙ্গে বেড়ে ওঠা আর খুনসুঁটি করেই পার হয়ে যায় পুরো সময়। তবে সেই সম্পর্ক আরও মধুর হয়ে উঠে যমজ ভাইবোনদের ক্ষেত্রে। একসাথে খাওয়া, খেলাধুলা করা ও পড়াশোনা করাসহ তারা মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে আশপাশে। তেমনি একসঙ্গে এক বিদ্যালয়ে ২০ যমজ ভাইবোন পড়াশোনা করছে। একসঙ্গে এক বিদ্যালয়ে এত যমজ ভাইবোন পড়াশোনার বিষয়টি সাড়া ফেলেছে এলাকায়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুল ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানে একসাথে বিভিন্ন শ্রেণীতে ২০ জন যমজ ভাই-বোন পড়ালেখা করছে।
স্কুলটির ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে তাহসিন-তাসনিম ও সান-মুন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে কার্তিক-গণেশ, হাবিব-হাফিজ ও সুমাইয়া-সাদিয়া, অষ্টম শ্রেণিতে শুভ-সৌরভ, নবম শ্রেণিতে হাসি-খুশি ও তাহবি-তাসবি এবং দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে আবিদ-অমিত ও রাহুল রাহা-চঞ্চল রাহা যমজ ভাইবোন। যমজ ভাইবোনদের চেহারায় মিল থাকায় তাদের নিশ্চিত করতে খানিকটা বিড়ম্বনা হলেও তাদের সঙ্গে নিয়ে বেশ উপভোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহপাঠীরা।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করছে ১০ জোড়া জমজ ভাই-বোন। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে দুই জোড়া, সপ্তম শ্রেণিতে তিন জোড়া, অষ্টম শ্রেণিতে এক জোড়া, নবম শ্রেণিতে দুই জোড়া এবং দশমে দুই জোড়া ভাই-বোন রয়েছে।
দুইজন একসঙ্গে বেড়ে ওঠাকে বেশ গর্বের সঙ্গে দেখছে যমজ ভাইবোনেরা।
সপ্তম শ্রেণির যমজ দুই বোন সুমাইয়া ও সাদিয়া জানায়, আমাদের কাজগুলো আমরা একসঙ্গে করি। আমাদের দুজনের প্রিয় রঙ হল নীল। আমরা একসঙ্গে স্কুলে আসি। একসঙ্গে ক্লাশে বসি। টিফিনের সময় আবার একসঙ্গে খেলাধুলা করে থাকি।
নবম শ্রেণির যমজ দুই বোন হাসি ও খুশি জানায়, আমাদের একটা বড় সুবিধা হলো কেউ কোনো ভুল করলে একজন আরেকজনকে চাপিয়ে দেওয়া যায়। পরে আবার আমরা একসঙ্গে মিলে যাই। আর পরিবারের কাছে, আত্মীয় স্বজনদের কাছে ও শিক্ষকদের কাছেও আমরা বেশ আদর পাই। আমরা আমাদের পুরো সময়টা একসঙ্গে কাটাই। আমরা যমজ হয়ে অনেক খুশি।
চেহারায় মিল থাকায় শিক্ষক ও সহপাঠীরা বিভ্রান্ত হলেও মেধার দিক দিয়ে কোন অংশে কমতি নেই বলে জানালেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাই পুরো ক্লাসে মিল-অমিলের হিসেব কষাকষির বিষয়টিও হাস্যরসে পরিণত করে সবাইকে। খেলাধুলা, পড়াশুনা করা নিজেদের ভালোলাগার পাশাপাশি মুগ্ধতা ছাড়ায় আশেপাশেও।
ওই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রোজিনা পারভীন জানান, পাঁচ বছর আগে প্রথম দুই জোড়া যমজ ভাই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। তারা এখন দশম শ্রেণিতে পড়ে। এর পরের বছর আরও দুই জোড়া ভাই-বোন ভর্তি হয়। এভাবে প্রতিবছরই ভর্তি হয়েছে যমজ শিক্ষার্থী। এটা একটা চাঞ্চাল্য ব্যাপার যে প্রতিবছরই ভর্তি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যমজ শিক্ষার্থী থাকছে।