ছাত্রীর অভিভাবককে অপদস্ত করা সেই বিচারক প্রত্যাহার
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (ভিএম) অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের ডেকে অপদস্থকারী বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্তান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
এর আগে ভিএম স্কুলের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে ভিএম স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, স্কুলের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিয়ে পরিচ্ছন্ন করেন ছাত্রীরা। গত সোমবার বিচারকের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই ছাত্রী নিজেকে বিচারকের মেয়ে পরিচয় দিয়ে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।
সোমবার রাতে রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সহপাঠীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে স্ট্যাটাস দেন। ওই পোস্টে তার চারজন সহপাঠী পাল্টা মন্তব্য করেন। এ নিয়ে বিচারক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার অভিভাবকদের স্কুলে ডাকতে বলেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষকের ডাকে ওই চার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিভাবকরা এসময় বিচারকের পা ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ওইদিন বিকেল চারটার দিকে বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
বিকেল ৫টার দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াছমিন স্কুলে আসেন। তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন।
এ সময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিচারককে স্কুলে এসে আলোচনায় বসতে হবে। পরে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বিচারককে স্কুলে আসার অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি আসতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। ছাত্রীদের আন্দোলনের মুুুুখে রুবাইয়া ইয়াসমিনকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হলো।