৫-৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে এখন ৫-৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার আছে। তারা ঘরে বসে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। একটা সময় ছিল যখন তাদের কোনো আইডেনটিটি ছিল না। ফ্রিল্যান্সারদের বিয়ের বাজারে মূল্য ছিল না। সবাই প্রশ্ন করত- এটা (ফ্রিল্যান্সার) আবার কী? স্কুলে ছেলে-মেয়ে ভর্তি করতে গেলেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো। বর্তমান সরকার ফ্রিল্যান্সারদের আইডেনটিটি ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৩ মার্চ) গণভবনে সদ্য সমাপ্ত কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ফ্রিল্যান্সারদের উপার্জিত টাকা দেশে আনতেও হাজার প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেটাও আমরা সহজ করে দিয়েছি। তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ করাই আমার লক্ষ্য। এ জন্য তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার আগে দরকার স্মার্ট জনগোষ্ঠী। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবার আর্শীবাদের হাত আমার মাথায় ওপরে আছে। কাজেই কে কী চাপ দিল না দিল, তা নিয়ে আমার কিছু আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে যা কিছু করার তা আমি করব। এরকম বহু চাপ আমাকে দেওয়া হয়েছিল। পদ্মসেতুর আগে তো কম চাপ দেওয়া হয়নি। অনেক চাপের পরও কিন্তু নিজেদের অর্থে আমরা পদ্মাসেতু বানিয়ে দেখিয়েছি।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যিনি এত নামিদামি, তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাড দিতে হবে কেন— এটি আমার প্রশ্ন। ৭০ বছর বয়সেও একটা লোক এমডি থাকতে চায়, সেই চাপও শেখ হাসিনা সহ্য করেছে— মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এটা ঠিক বিবৃতি না, এটা একটি অ্যাডভার্টাইজমেন্ট— উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করেছে আমাদের বিশেষ একজন ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেব জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, প্রশ্নটা হলো যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। এটাই আমার প্রশ্ন আর কিছু না। অ্যাড দিতে হলো কেন?
শেখ হাসিনা বলেন, আমার দেশে কতগুলো আইন আছে। সেই আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং চলে। আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমরা শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ করি। যারা ট্যাক্স ঠিক মতো দেয়, আলাদা বিভাগ আছে. তারা ট্যাক্স আদায় করে। কেউ যদি এই সমস্ত বিষয়ে কোনো রকম আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের অধিকার; শ্রম আদালত সেটা দেখে। এখানে তো আমার কিছুই করার নেই, সরকারপ্রধান হিসেবে। সেখানে আমাকে বা-ই কেন বলা হলো? এর বাইরে আমি কী বলব? পদ্মাসেতু কিন্তু করে ফেলেছি, খালি এটুকু সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।
প্রধানমন্ত্রী গত ৮ মার্চ কাতার সফর শেষে দেশে ফেরেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ মার্চ কাতার সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি, প্রবাসী শ্রমিকদের ইস্যুসহ দুই দেশের দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে আলাপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি, কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেইখা মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।